বিশ্ব-রচনা

যবে, স্বজনবাসনা-কণা, ল’য়ে কৃপা-আঁখি-কোণে,
চাহিলে, হে রাজ-অধিরাজ!
অমনি, নিমেষে বিরাট বিশ্ব, চরণে করিয়া নতি,
মহাশূন্যে করিল বিরাজ!
মহালোক সিন্ধু হ’তে এক বিন্দু ল’য়ে করে,
প্রক্ষেপ করিলে, বিভু, অন্ধকার চরাচরে;
অমনি চরণতলে, আলোকমণ্ডিত বিশ্ব,
সন্তরিল জোতিঃস্রোতোমাঝ;
মহাশক্তি-তৃণ হ’তে হেলায় একটি বাণ
নিক্ষেপিলে, জড়বিশ্ব অমনি পাইল প্রাণ;
হ’ল, মহাবেগে ঘূর্ণ্যমান, আলোড়ি’ মহাবিমান,
অগণিত জ্যোতিষ্কসমাজ।
আনন্দ-কণিকামাত্র পড়িল ব্ৰহ্মাণ্ডশিরে,
হাসিল এ চরাচর পুলকে শিহরি’ ধীরে,
বহিল আনন্দধারা, জড়-জীব মাতোয়ারা,
পরি’ তব আরতির সাজ;
চিরপ্রেম-নির্ঝরের একটি বুদ্ধুদ ল’য়ে
ফেলে দিলে, প্রেমধারা চলিল অশ্রান্ত ব’য়ে,
অমনি, জননী করিল স্নেহ, সতীপ্রেমে পূর্ণ গেহ,
গ্রহ ছুটে এ উহার পাছ।
হেলায় ছিটায়ে দিলে, অক্ষয়-সৌন্দৰ্য-তুলি,
ভাবচ্ছটা উজলিল মোহন বদন তুলি’,
অমনি, অনন্ত বরণ আসি’, ছড়াইল শোভারাশি,-
ধন্য তব নিত্যকারুকাজ!
তুমি কি মহান্‌, বিভু, আমি কি মলিন, ক্ষুদ্র,
আমি পঙ্কিল সলিলবিন্দু, তুমি যে সুধাসমুদ্র!
তবু, তুমি মোরে ভালবাস, ডাকিলে হৃদয়ে এস,
তাই এত অযোগ্যের লাজ।

মিশ্র ইমন- কাওয়ালী।