জেনে রাখ

মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সেই, যে পূরো পাঁচ হাত লম্বা;
সাধু সেই, যে পরের টাকা নিয়ে, দেখায় রম্ভা!
ধার্ম্মিক বটে সেই, যে দিন রাত ফোঁটা তিলক কাটে;
ভক্ত সেই, যে আজন্মকাল চৈতন নাহি ছাঁটে।
সেই মহাশয়, সংগোপনে যে মদটা আস্‌টা টানে,
নিষ্ঠাবান, যে কুক্কুটমাংসের মধুর আস্বাদ জানে।
রসিক সেই, যার ষাট্‌বছরে আছে পঞ্চম পক্ষ,
সেই কাজের লোক, চব্বিশ ঘণ্টা হুঁকো যার উপলক্ষ্য।
সেই কপা’লে, বিয়ে ক’রে যে পায় বিশ হাজার পণ;
নারী মধ্যে সেই সুখী, যার কত্তে হয়না রন্ধন।
সেই নিরীহ, রামের কথা যে শ্যামের কাণে দেয় ব’লে;
সেই বাবু, যে বোঁচা হা’ত জামায় ফুঁ দিয়ে চলে!
ভদ্র সেই, যার ফরসা ধুতি ফুট্‌ফুটে যার জামা;
দেশহিতৈষী সেই, যার পায়ে “ডসনের” বিনামা।
মদ খেয়ে, যা’ ভুলে থাক্‌তে হয় সেই আদত বিচ্ছেদ;
কালো ফিতে ধারণ আছে যার, তারেই বলি খেদ।
বেহুঁস হ’য়ে ড্রেনে পড়ে রয়, সে অতি সম্ভ্রান্ত;
সাদা কালোয় ভেদ না রাখে, সে হাকিম কি ভ্রান্ত!
‘এষ অর্ঘ্যং’ যে বলে, সেই দশকৰ্ম্মান্বিত;
সেই বেদজ্ঞ, ফলারের নামে যে ভারি আনন্দিত।
‘রাজ-লক্ষণ আছে আমার’, যে কয়, সেই জ্যোতিষী;
লম্বা-দাড়ী, গেরুয়া-ধারী, সেই তো আদত ঋষি;
‘সর্ট-সাইটেড্‌’ চসমা নিলেই, বুঝ্‌বে, ছোকরা ভাল,
বাপকে যে কয় ‘ঈডিয়ট্‌’, তার গুণে বংশ আলো!
সেই গুরু, যিনি বৎসরান্তে আসেন বার্ষিক নিতে;
বদান্য, যে একদম্ লাখ্‌ দেয়- উপাধি কিনিতে।
আসল তন্ত্রী সেই, যে সদাই আওড়ায় মুখে ‘দ্রুমফট্‌’,
সেই আদত বীর, সাহেব দেখ্‌লেই যে দেয় সোজা চম্পট!
সে কালের সব নিরেট বোকা এ সত্য কি জান্‌ত,-
যে লেখক বল্লেই, বুঝ্‌তে হবে, এই ধুরন্ধর ‘কান্ত’?

মিশ্র বিভাষ- কাওয়ালী।