ঔদারিক

যদি, কুমড়োর মত, চালে ধ’রে র’ত,
পান্‌তোয়া শত শত,
আর, স’রষের মত, হ’ত মিহিদানা,
বুঁদিয়া, বুটের মত!
(প্রতি বিঘা বিশ মণ ক’রে ফ’ল্‌তো গো);
(আমি তুলে রাখিতাম); (বুঁদে মিহিদানা গোলা বেঁধে
আমি তুলে রাখিতাম);
(গোলা বেঁধে আমি তুলে রাখিতাম, বেচ্‌তাম না হে);
(গোলায় চাবি দিয়ে, চাবি কাছে রাখিতাম, বেচ্‌তাম না হে)।
যদি তালের মতন, হ’ত ছানাবড়া,
ধানের মতন চ’সি;
(আমি বুনে যে দিতাম);
(ধানের মতন ছড়িয়ে
ছড়িয়ে বুনে যে দিতাম);
(চ’সি এক কাঠা দিলে, দশ মণ হ’ত বুনে যে দিতাম)।
আর, তরমুজ যদি, রসগোল্লা হ’ত,
দেখে প্রাণ হ’ত খুসি
(আমি পাহারা দিতাম); (কুঁড়ে বেঁধে আমি পাহারা
দিতাম);
(ক্ষেতে কুঁড়ে বেঁধে আমি পাহারা দিতাম)।
(তামাক খেতাম আর পাহারা দিতাম); (ব’সে ব’সে,
তামাক খেতাম আর পাহারা দিতাম); (সারা রাত
তামাক খেতাম আর পাহারা দিতাম); (খেঁকশিয়াল
আর চোর তাড়াতাম, পাহারা দিতাম)।
যেমন, সবোবর মাঝে, কমলের বনে,
শত শত পদ্ম-পাতা,
তেমনি, ক্ষীর-সরসীতে, শত শত লুচি,
যদি রেখে দিত ধাতা!
(আমি নেমে যে যেতাম); (ক্ষীর-সরোবর-ঘন-জলে আমি
নেমে যে যেতাম); (গামছা প’রে নেমে যে যেতাম);
(একটু চিনি যে নিতাম); (সেই চিনি ফেলে দিয়ে
ক্ষীর লুচি আমি মেখে যে খেতাম); (আহা মেখে যে
খেতাম!)
যদি, বিলিতি কুম্‌ড়ো হ’ত লেডিকিনি,
পটোলের মত পুলি;
(আর) পায়েসের গঙ্গা ব’য়ে যেত, পান
ক’ৰ্ত্তাম দু-হাতে তুলি’।
(আমি ডুবে যে যেতাম); (সেই সুধা-তরঙ্গে ডুবে যে
যেতাম);
(আর, বেশী কি বল্‌ব, গিন্নীর কথা ভুলে, ডুবে য,
যেতাম)।
(আর উঠ্‌তাম না হে); (গিন্নী ডেকে ডেকে কেঁদে
মর্‌তো,
তবুতো উঠতাম না হে); (গিন্নী হাত ধ’রে কর্‌তো
টানাটানি,
তবু উঠতাম না হে)।
সকলি ত’ হবে বিজ্ঞানের বলে,
নাহি অসম্ভব কৰ্ম্ম;
শুধু, এই খেদ, কান্ত আগে ম’রে যাবে,
(আর) হবে না মানব জন্ম।
(আর খেতে পাবে না); (কান্ত আর খেতে পাবে না);
(মানব জন্ম আর হবে না,
খেতে পাবে না); (হয়তো, শিয়াল কি কুকুর হবে,
আর খেতে পাবে না); (আর সবাই খাবে গো তাকিয়ে
দেখ্‌বে, খেতে পাবে না); (ফ্যাল্‌ ফ্যাল্‌ ক’রে তাকিয়ে
রইবে খেতে পাবে না); (সবাই তাড়া হুড়ো ক’রে
খেদিয়ে দেবে গো, খেতে পাবে না)।

মনোহরসাই- গড়-খেম্‌টা।
সম্পূর্ণ।