পুরোহিত

আমাদের, ব্যাব্‌সা পৌরোহিত্য,
আমরা, অতীব সরল-চিত্ত,
হিত যাহা করি, জানেন গোসাঞী,
(তবে) হরি যজমানবিত্ত।
আমাদের, রুজি এ পৈতে গাছি,
রোজ, যত্নে সাবানে কাচি,
আর, তালতলা চটি পেন্‌সেন্ দিয়ে,
ঠন্‌ঠনে নিয়ে আছি।

দেখ্‌ছ, আর্কফলাটি পুষ্ট,
যত, নচ্ছার ছেলে দুষ্ট,
কি, বিষ-নয়নে ঐটে দেখেছে,
কাট্‌তে পেলেই তুষ্ট।

বাবা, দিয়েছিল বটে টোলে,
কিন্তু, ঐ অনুস্বারের গোলে,
“মুকুন্দ সচ্চিদানন্দ” অবধি
প’ড়ে, আসিয়াছি চ’লে।

যদিও, ছুঁইনি সংস্কৃত কেতাব,
তবু “স্মৃতি-শিরোমণি” খেতাব,
কিন্তু, কিছু যে জানিনে, বলে কোন্ ভেড়ে?
মুখের এমনি প্রতাপ!

আছে, ব্রতের একটি লিষ্টি,
তারা মায়ের এত কি সৃষ্টি।
আমরা, সব চেয়ে দেখি, সোপকরণ
মিষ্টান্নটাই মিষ্টি!

দেখ, রেখে গেছে বাপ দাদা,-
ঐ, মন্তর গাদা গাদা,
আরে, যেমন তেমন ক’রে আওড়াও,
দক্ষিণাটি ত’ বাঁধা;

মোদের, পসার বিধবাদলে;
এই, পৈতে টিকির বলে,
দক্ষিণে, ভোজনে, বেড়ে যুত, আর
মন্ত্র, যা’ বলি চলে।

মা সকল, বামুন খাইয়ে সুখী,
আর, আমরাই কি ভোজনে চুকি?
এই, কণ্ঠা অবধি পরস্মৈপদী
লুচি পান্‌তোয়া ঠুকি।

ঐ, “সিন্দুরশোভাকরং”,
আর, “কাশ্যপেয় দিবাকরং”
মন্ত্রে, লক্ষ্মীর অঞ্জলি দেওয়ায়ে,
বলি, ‘দক্ষিণাবাক্য করং’।

বড়, মজা এ ব্যাব্‌সাতে,
কত, কল্ যে মোদের হাতে;
ঐ, ফল লাভ, আর মন্ত্রের দৈর্ঘ্য,
দক্ষিণার অনুপাতে;

সাঁঝে, একপাড়া থেকে ধরি,
জ্ঞান নাই যে বাঁচি কি মরি,
বাড়ী বাড়ী দু’টো ফুল ফেলে দিয়ে,
দু’শো কালীপূজো করি!

পূজোর, কলসী না হ’লে মস্ত,
কেমন, হই যে বিকারগ্রস্ত!
পিতৃলোক সহ কৰ্ত্তাকে করি
একদম নরকস্থ।

আমরা ‘ধর্ম্মদাস দেবশৰ্ম্ম’,
আমরা, বিলিয়ে বেড়াই ধৰ্ম্ম,
কিন্তু, নিজের বেলায়, খাঁটি জেনো, নেই
অকরণীয় কুকৰ্ম্ম।

সুর-‘আমরা বিলেত ফের্‌তা ক’ভাই।’- D. L. Roy.