আজীবন আমার ব্যাথাবিধ্বস্ত হৃদয়

সেদিন বিরামহীন বৃষ্টি একটানা
জলতরঙ্গের মিষ্টি সুর
আমার প্রতীক্ষারত হৃদয়ে
নিভৃত সুর আর গান
‘ঝর্না’ আজ আসবে।

অজস্র মুহূর্ত ক্রমেই ভেঙ্গে পড়ে
ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে
সময়ের জলে ঝুপঝাপ
য্যামোন ভাঙ্গে নদীর আল্গা পাড়।

মিষ্টি বর্ষা ক্রমশ হ্যারিকেন হোলো
বিকট ভাঙন এলো
অসংখ্য মৃত্যু বাসা বাঁধলো।
মৃত্যু- মৃত্যু, কালো মৃত্যু
অন্ধকার রাত্রি হোয়ে নামলো
কিষানের একচালা ঘরে
মাতব্বরের বৈঠকখানায়
কিশোরীর খেলার অঙ্গনে
বন্ধুর মতো ধ্বংস এলো
অথচ ‘ঝর্না’ আজো এলো না।

ওর কালো চোখে একদিন
সমস্ত রাত্রি জেগে
যে নিরব জিজ্ঞাসা দেখেছিলাম
দেখেছিলাম নিরবে
নিরবে নিভৃতে
তার উত্তর আমি জানি না
জানি না কোনোদিন
সেদিনও না।

তারপর ক্রমশ ঝড় থেমে গেলে
জীবিত যারা তখন
বাঁচার নামে
আবার তুল্লো ঘর
বিধ্বস্ত ভিতে
চোখের জল মুছে
গামছায়
শাড়ীর আঁচলে।

আবার সাজানো সংসার
আবার গান গাইলো সকলে
আবার ঘর উঠলো
কিন্তু ব্যাথাবিধ্বস্ত আমার হৃদয়ে
কোনোদিন আর ওঠনি ‘ঝর্না’র ঘর,
‘ঝর্না’র গান
কোনোদিন গায়নি কেউ
আমার হৃদয়ে
‘ঝর্না’ কোনোদিন আসেনি আর…।

(২৬.৯.১৯৭৩)