ক্রুশবিদ্ধ যীশু আমার বুকে

শহরের সমস্ত রাস্তায় তোমাকে খুঁজেছি।

দেশ থেকে দেশান্তরে খুঁজেছি-
খৃস্টাব্দের এথেন্স নগরীতে এক সুরম্য সন্ধ্যায়
মহামান্য সোক্রেতাস এসে বিনম্র সহাস্যে
করমর্দন কোরে বলেছিলেন “কি খুঁজছে?”

আমি নিরুত্তর পুনরায় খুঁজেছি তোমাকে
আদি থেকে সম্প্রতি খুঁজেছি।

সদ্য সাদা পতাকা ওড়া প্যালেস্টাইনে
সশস্ত্র জনৈক সৈনিককে জিজ্ঞেস কোরলাম
“ওকে দেখেছো?” সে বিবর্ণ চোখে তাকালো।
ভিয়েৎনামে ফ্যান্টমের ছোবলে নিহত বিভৎস
এক বৃদ্ধার চোখে আমারই প্রশ্নের নীল পোস্টার।

মাইলাই থেকে একাত্তরের ধূসর বাংলাদেশে
সহস্র মৃত্যুর শোভযাত্রায় সেদিনও আমি
একটি প্রশ্নের ব্যানার টাঙিয়েছিলাম
আমার শতাব্দীর বুভুক্ষু চোখে।

হে মহামান্য যীশু, মুহম্মদ তোমরা কি খুঁজেছিলে
আমি জানি না। আমি শতাব্দীর কান্না দেখেছি শুধু।

মান্যবর যীশু তুমি যে ক্রুশে হয়েছো নিহত
সে ক্রুশ আজ আমারই বুকে প্রজ্বলমান,
অসংখ্য আগ্নেয়গিরির তপ্ত লাভা
আমার বুকের নিবাসে উৎক্ষিপ্ত।
ক্রুশবিদ্ধ মৃত্যু যন্ত্রনায় আমার হৃদ্পিণ্ড আজ যীশু-

অথচ আজো আমি তোমাকে খুঁজছি
লোক থেকে লোকান্তরে খুঁজছি।

(৩০.৩.১৯৭৪)