মাতালের মধ্যরাত্রি

এ-ও এক কণ্ঠলগ্ন প্রেম রক্তের গহনে,
মারমুখি জনতার মতাে ভীষন বিক্ষুদ্ধ।
যেন সমুদ্রের ঝড়,
সহজে উড়িয়ে নেবে মাস্তুল, মাল্লার মুগ্ধ-চিত্ত মােহ রমনী।

রত্তলগ্ন নগ্ন ক্ষোভে কাঁপে বিষন্ন বন্দর,
সফেদ জলকপােত যেন তার দীর্ঘশ্বাস
আকাশে ইথারে ঝরে—
মাঝরাতে পুলিশের বাঁশি শুনে জেগে ওঠে ক্লান্ত করুন মাতাল।

মনে পড়ে, একদিন অরক্ষিত জীবনকে পাহারা দিয়েছে সে-ও,
দস্যুর সন্ত্রাসে ভীত সে-ও একদিন মারনাস্ত্রে সাজিয়েছে তাকে।
তবু তার লুট হয়ে গেছে ঘর-

তবু তার বাসনার সিন্দুক ভেঙে দুরূহ ডাকাত
ছিনিয়ে নিয়েছে সব গান, স্বস্তির সােনালি ফসল।

মাঝরাতে পুলিশের বাঁশি শুনে মনে পড়ে-
তারও শহর ছিলাে, ডাকাতের ভয় ছিলাে,
একদিন তারও মাংশের পৌর জনপদে
নিরাপত্তায় নিয়ােজিত তীব্র প্রহরী ছিলাে।

আজ সব পােড়োবাড়ি- ধংশের কালাে কফিন পাহারা দিয়ে
আজো তার কণ্ঠলগ্ন মগ্ন প্রেম ভালােবেসে পােড়ায় তনু।
মাঝরাতে পুলিশের বাঁশি শুনে জেগে ওঠে করুন মাতাল,
আকাশের মতাে তার চোখ থেকে ঝরে ম্লান ব্যথার শিশির-

নগ্ন অন্ধকারে ভাসমান ওই যে-বিষন্ন মানুষ, ব্যথিত মানুষ,
অস্থির মাতাল ওই হাতে ওর তুলে দাও রাত্রির সমস্ত পাপ,
ওকে আরাে মাতাল হতে দাও, ওকে আরাে ব্যথিত হতে দাও।।

২৪.০৮.৭৬ সিদ্ধেশ্বরী, ঢাকা।