নদীর ওপারে থাকে রোদ

নদী পার হয়ে এসো, তা না হলে দ্যাখাই হবে না।
খেয়ায় খোঁয়ারি ভাঙে স্বপ্নগ্রস্ত জলজ যুবক,
সে তোমাকে নায়ে তুলে পৌঁছে দেবে পাললিক তীরে।
তাকে দিও হৃদয়ের মতো লাল একটি গোলাপ-

এখনো ফাল্গুন এসে নাড়া দিয়ে যায়নি বাতাসে,
জলের চিতানো বুক অনাবিল, প্রশান্ত এখনো।
ঢেউ ভেঙে সকলেই পাড়ি দিয়ে আসে না দরিয়া,
স্বপ্নমগ্ন স্নিগ্ধ জলে কেউ কেউ পাড়ি দিতে চায়।
বেছে নিতে পারো এই তির তির শান্ত মুগ্ধ জল,
তা না হলে দীর্ঘকাল প্লাবন ও তুফানের জন্যে
প্রতীক্ষায় থেকে যাবে সুতনূকা তোমার বয়স।

এই পারে আমি এক মরমিয়া তরুর স্বভাব
শিকড়ে শাখায় মেলে ধরে আছি ফুল ও ফসল,
নদী পার হয়ে এসো প্রজাপতি- অথবা পেখম
খুলে ফেলে সবুজ পাতার কাছে ফিরে চাও প্রেম।

এক নদী ব’য়ে যায়, অন্য নদী ভিতরে নিরব,
কার জন্যে কোন নদী, কার খেয়া কোন ঘাটে বাঁধা
জানাই হলো না আজো।
শুধু নক্ষত্রের ঝ’রে পড়া দেখে দেখে রাত বাড়ে,
বেলা যায়- অপেক্ষায় ঝ’রে পড়ে স্বপ্নময় চোখ।

হৃদয়ের সুগভীরে নীল এক ক্ষত পুষে রাখি,
হাত তুলে ডাকি-
নদীটির ওই পারে থাকে রোদ, থাকে সূর্য,
মাঝখানে আশার কুয়াশা ঢাকা বহমান জল।।

০২.১১.১৯৯৬ মিঠেখালি মোংলা