পিতার নীল নকশা

সামনে দাঁড়ায় ঘোর সংসারে বাবার মৃত জায়নামাজ
যার উষ্ণ অস্তিত্বে একদিন কিছু পৈত্রিক পুণ্য প্রার্থনা শুন্যের দিকে
পাখা মেলে উড়তো শাদা পারাবত-

অই সব পুণ্য প্রার্থনার নিবোধ বাসনারা আমার রক্তের ভূমিতে
বৃক্ষের বীজ বুনে বিস্তৃত হোতে চেয়েছিলো শিকড়ে পাতায়
অথচ আমার ভেতরে বাবাকে হত্যা কোরে আমি এক অনন্ত ফেরারী।

সামনে দাঁড়ায় ভিটেমাটি পৈতৃক বসতবাড়িতে পিতামহের শূন্য করতল
বাবার প্রৌঢ় মাংশের বন্দরে একাধিক ভুলের সুরম্য সরলতা-
আমি জানি বাবা কোনদিন নিজেকে চিনতে পারেনি।

জীবনের গভীর উঠোনে এক নীল করবীগাছের ছায়ায়
বিষময় ফলে তাঁর নিঃসঙ্গ হাতখানা বিভ্রমে কেঁপে উঠেছিলো
আজো কেঁপে ওঠে দুঃস্বপ্নের হাওয়ায়।

শুভ্র শুশ্রুর আড়ালে ভুলের জ্যামিতিক রেখায় বাঁধা অসহায় ক্ষোভ,
তোমার প্রার্থনায় একটি ভুল শব্দ ছিল তুমি তাকে জানতে না
এ-জন্মে কোনদিন ভুল কোরেও তুমি জানবে না সেই ভুল ব্যর্থতা
তোমার প্রার্থনার শরীরে লুকোনো অসুখ।

আমি কোনোদিন রঙ্গিন করবীর ফলকে খাদ্য ভাবিনি,
ধানের গন্ধ ছুঁয়ে তোমার স্বপ্নের পোষা হরিন
বনের গহনে ফেলে এসেছি।

সামনে দাঁড়ানো পিতামহের সবচে’ গাঢ় ব্যর্থতা
বাবার প্রৌঢ় মাংশের বন্দরে প্রার্থনার ভুল শব্দ, সংসার, মানুষ
আমার রক্তে বীজ বুনে বিস্তৃত হোতে চেয়েছিলো শিকড়ে পাতায়।

অথচ আমার ভেতরে বাবাকে হত্যা কোরে আমি এক অনন্ত ফেরারী …