পথ ছাড়ো

হট্ যাও বুড়োবৃন্দ, সরো, পথ ছেড়ে দাও, আমাদের যেতে হবে দুরে।
ঝামেলা পাকিয়ে দিচ্ছো, অনর্থক পেজগি লাগিয়ে দিয়ে ভাঙছো খোয়ারি,
সরো, আমাদের যেতে হবে বহুপথ বহুদূরে হারানো হরিনপুর-

সেখানে অপেক্ষা কোরে আছে এক নিমগ্ন বাউল স্নিগ্ধ একতারা হাতে,
সেইখানে পাখিদের জন্যে কেনা খাঁচা কেউ ভালোবেসে নির্মান করেনি।
সেখানে নদীর নাম ভালোবাসা, তরুদের খোলামেলা ডাক নাম প্রেম,
বিশ্বাস বন্ধুর মতো কাঁধে হাত রেখে হাঁটে, সেইখানে ফোটে শত ফুল।

এ্যালকোহলিক জিভ নেড়েচেড়ে, নাকে টেনে নস্যির নিরালা নেশা,
মাছের চোখের মতো নিরুত্তাপ লেন্সে ঢাকা জোড়া চোখ নিরবে নাচিয়ে
কি বোঝাতে চাইছে এখন? সরো, হট্ যাও, একটুও পাকামো কোরো না।
দেখেছি তো তোমাদের নাচানাচি এতোদিন, এবার থামাও, ক্ষ্যামা দাও।

রূপকথা শুনিয়ে শুনিয়ে আর কতো রাত অকারনে পার কোরে দেবে?
মাটি কোরে দেবে আর কতো রাত কল্পিত আতংক দিয়ে সাজিয়ে সময়?
আসমানে ফেটে গেছে চাঁদের কার্পাস গুটি, জোস্নার সোনালি তুলো ওড়ে,
গাঙের কিনার ঘেঁষে দল বেঁধে হরিনেরা পান করে আলোর আরক।

রাত ঝ’রে গেছে দিন মনেও রাখেনি কারো অনাবিল হৃদয়ের ঘ্রান-
সভ্যতার বিষাক্ত নিশ্বাস লেগে মানুষ গুটিয়ে গেছে শামুকের মতো।
এতো ছোটো হয়ে গেছে আজ মানুষের বিশাল হৃদয়। হায় এতো ছোটো,
নিজের জন্যেও তার অবশিষ্ট এক ফোঁটা জাগা নেই নিজের হৃদয়ে!

জানি না কতোটা পথ গেলে পর ফিরে পাবো মুক্ত মাঠ, নির্মল হাওয়া-

২৮.০৮.১৯৯৭ রাজাবাজার ঢাকা