সাধারনের নিয়ম রীতি

দেখলাম জনতার রাজপথে প্রানবন্ত বিজয়ী জনতা,
আনন্দমাখানো মৃত্যু আর শোক চেপে রাখা উল্লাসের হাসি।
দেখলাম, কুশপুত্তলিকার দুর্বল অসহায় হাত কি রকম
দ্রুত সম্মিলিত মানুষের উত্তোলিত হাতে হাতে ঘুরে ফেরে।

মিলিত মানুষ তার স্বপ্নসহ কি বিপুল অগাধ ক্ষমতা
দেখলাম প্লাবনের কাছে কত অসহায় সুপ্রাচীন বট।
ফুঁসে ওঠা জোর কোটাল কতোখানি অনায়াসে নিয়ে যায়
বিশদ স্রোতের টানে খড়কুটো গেরস্থি সংসার- দেখলাম।

বিবিধ বিপত্তি শেষে লখিন্দর ঠাঁই পেলো লোহার বাসরে,
দেখলাম, নির্দেশনা দিলো রাজপথে বিজয় মিছিল।
লোহার বাসর ঘরে থেকে যায় সূচাগ্র গোপন পথ,
তবু চিরকাল বেহুলার ভাগ্যে নামে বঞ্চনা, অপার ক্ষতি।
চিরকাল বিজয়ের স্বর্নরেনু ভোগ করে গুটিকয় দেহ-

মিছিলের বিরুদ্ধ শিবিরে যারা এতদিন উচ্ছিষ্ট গিলেছে,
তাদের অনেককেই দেখলাম নৃত্যরত বিজয় মিছিলে।
দেখলাম দরবার নটিনীরা অতি দ্রুত ঠাঁই করে নেয়,
কুকুরেরা সযতন পাহারায় রাখে শেয়ালগুলোকে আর
গাভীদের মৃত্যুশোকে চোখ মোছে শকুনেরা বেদনার্ত মনে,
দেখলাম, এ-ও তো দেখতে হলো উল্লাসের মুখর আলোয়।
নৌকোর বিরুদ্ধে হাতি, ঘোড়ার বিরুদ্ধে খাড়া মন্ত্রি মহোদয়,
দেখলাম, চোখে মাখা স্বপ্নগুঁড়ো উদ্বেলিত ব’ড়ে সাধারন
কেবলি এগিয়ে যায় ইতিহাস নির্ধারিত সামনের দিকে,
এ- ছাড়া পেছনে তার ফেরার উপায় নেই বন্ধ সব পথ।

দাবার চালের মতো কেবলি সামনে চলা ব’ড়েদের রীতি।।

২৪.০৮.১৯৯৭ রাজাবাজার, ঢাকা