রিক্তাতিথির অতিথি

পদ্ম যখন ঝরে গেছে সায়র শূন্য ক’রে
জাফ্রানে ফুল ফোটেনি এক্টিও
তখন যারা অতিথ এল তোমার দুয়ার পরে
হায় গো তাদের দিচ্ছ তুমি কি ও?
রিক্তাতিথির অতিথি হায় যারা
শূন্য হাতেই ফিরবে কি গো তারা?

শূন্য হাতে ফিরবে কিগো ফিরবে শূন্য মনে
বিদায় নিয়ে যাবে মলিন হেসে,
হায় গো আশাভঙ্গে ভেঙে পড়বে ক্ষণে ক্ষণে
কেমন ক’রে ফিরবে, বল, দেশে?
কেন ব্যথা দিচ্ছ তুমি প্রাণে
একটি কুসুম ফোটাও না জাফ্রানে।

সুফেদ্ তরুর সবুজ তুলি মায়া-কাজল ভ’রে
বুলিয়ে তুমি দাও না ওদের চোখে,
দেখে তোমায় নিকনা সবাই এক নিমিষের তরে
বিজন পথে আধেক স্বপ্নালোকে,
দেখুক্ তোমায় দিনে দুই পহরে
বরফ-হরফ লেখা ললাট পরে।

দেখুক তুমি আসছ নেমে- আস্ছ নেমে নেমে
শৈল-শিলায় চরণ রেখে রেখে
ঝঞ্ঝা-তরল ঝরছে ঝিলম পায়ের পাতা ঘেমে
পাষাণ সোপান ফসল দিয়ে ঢেকে;
ঝর্ণা-ঝোরায় ঝরির ধারা পাতে
ঝরছে তোমার অমৃত দিন-রাতে।

চক্ষু সফল হোক দেখে ওই বিনিসুতায় গাঁথা
বলাকা-বকফুলের মালা তব,
স্বর্ণ মেঘে মায়া-মৃগ-চৰ্ম্ম-আসন পাতা
সন্ধ্যা-দেবীর স্বপ্ন-সমুদ্ভব।
জ্বালিয়ে মশাল তাজা সরল শাখে
দেখুক হিয়া তোমায় তারার ফাঁকে।

ওগো অ-ধর! দাও ধরা দাও! নয়ন-মনোহর!
ক্লান্ত পথিক আস্ছি পাহাড় ভেঙে,
অন্তরে আজ লাগুক আভা, আনন্দ-সুন্দর!
এর বেশী আর চাইনে তোমার ঠেঞে;
দেখতে যেন পাই ক্ষণিকের তরে
টুক তোমার সুপ্ত শ্রীনগরে।

ভ্রাক্ষা যখন কুঞ্জ হ’তে ফুরিয়েছে নিঃশেষে
কাকের খাদ্য কাও-দ্রাছে বন ভরা
তখন যারা অতিথ এল তোমার দুয়ার-দেশে
জুড়িয়ে তুমি দাওগো তাদের ত্বরা;
দ্রাক্ষা নাইবা রইল গো একটিও
কটাক্ষে সব সফল ক’রে নিয়ে।