চিঠি

হিন্দুর ‘পরে নির্ভর করে হিন্দুর যত আশা,
তবু মহারাণা ভুলিয়া আছেন তাহাদের ভালবাসা!
রাজপুতানার যত সর্দ্দার পৌরুষহীন আজ,
রাজপুতানার কুল-ললনার গেছে সম্ভ্রম-লাজ।
আকবর শাহ সমভূম সবে করিয়া ফেলিল প্রায়,
সবার দৃষ্টি আজিকে কেবল প্রতাপের মুখ চায়।
আকবর শাহ দালাল হ’য়েছে রাজপুতানার হাটে,
সবারে কিনেছে; প্রতাপে কিনিতে ধন নাই তার গাঁটে।
রাজপুতকুলে জন্ম লভিয়া মান কে হারাতে চায়?
তবুও সে ধন অনেকেরি গেছে বিকায়ে নৌরোজায়!
যবে একে একে হ’বে ক্ষত্রিয় শ্রেষ্ঠ রত্নহীন,
চিতোরের নারী আসিবে কি রাণা এই হাটে কোনোদিন?
অর্থ গিয়েছে, রাজ্য গিয়েছে তবুও প্রতাপ রায়,
পরম যতনে আছেন নিরত সে নিধির রক্ষায়।
নিরুপায় হ’য়ে অনেকে গিয়েছে, অপমানে জর্জ্জর,
সে কালিমা মুখে মাখে নাই শুধু হামির বংশধর।
প্রতাপ কোথায় এত বল পায় লোকে জিজ্ঞাসা করে,
শকতি তাঁহার তরবারে আর বীরোচিত অন্তরে।
মানুষ-হাটের এ দালাল কিছু রহিবে না চিরকাল,
মরিতে হইবে; তখন দেশের দূরে যা’বে জঞ্জাল;
সে দিন সবারে হ’বে বাহিরিতে প্রতাপের সন্ধানে,
বীর্য্যের বীজ হইবে রোপিতে বিজন রাজস্থানে;
তুমি শুধু জানো মান বাঁচাইতে, তাই সবে মুখ চায়,
দেশের গর্ব্ব কর প্রতিষ্ঠা অভিনব মহিমায়।

পৃথ্বীকবি (বিকানীর)।