গুরু-দরবার

(অম্বৎসর)

ভক্ত জাগো ভজন্-রাগে ভোর হ’ল গো দ্বার খোলো
(তোমার) মৃত্যুতরণ অশ্রু জমে অমৃৎ-সরোবর হ’ল।
গহন আঁধার রাত্রি শেষে
অরুণ এল তরুণ হেসে
অলখ্, এল আলোর বেশে চোখ্ মেল গগ মুখ তোলো

ফুট্ল তোমার অমৃৎ-সরে সোনার কমল ফুট্ল গো,
(ওগো) সেই কমলে সেই দেউলে অলখ্, ভ্রমর জুটুল গো!
সেই ভ্রমরের গুঞ্জরণে
রাগ-রাগিণীর কুঞ্জবনে
হৃদয়-পরাণ-নয়ন-মনে সারং বেজে উঠ্ল গো!

অলখ্-মৃণাল অতল-তলে উঠ্ল কখন্ হিল্লোলি’
(মরি) নিরঞ্জনের অঞ্জনে কার গোপন আঁখি উজ্জলি’!
ক্ষীর-সুকোমল পদ্ম-ডাঁটায়
ঘিরল কে গো খড়-কাঁটায়
আঁধার ঠেলে আলোর কূলে পৌছে দিতে অঞ্জলি।

তখন ছিল মেঘ্লা আকাশ বজ্র ছিল উদ্যত,
(দারুণ) দেশ-ভাঙা ঝড় ফিরতেছিল দেউল ভেঙে উদ্ধত,
তখন সবে ভক্ত-গুরু
হচ্ছে তোমার ভজন সুরু
ধ্যানে সোনার পদ্ম-মুকুল করছে গ্রীবা উন্নত।

গানে তোমার থাম্ল গো ঝড়, বাণে তোমার টুট্ল মেঘ,
(ওগো) তিন ভুবনে ধরতে নারে বিপুল তোমার প্রাণের বেগ,-
তোমার প্রাণের কোকনদে
ফেল্লে ঢেকে পঞ্চনদে
অমৃতের এই অতল হ্রদে ডুব্ল ভেদের সকল ভেক।

(আজ) দরবারীরা আসছে তোমার দরবারেতে করছে ভিড়,
(তোমায়) খাজ্না দিতে হাজির কত আলমগীরের বন্দ্য বীর,
মগন তুমি আজ ধেয়ানে,
তুলছ না যে কিছুই কানে!
গুরু জাগে! ভক্ত জাগ! বাদ্শা জাগো! কলম্গীর!

(ওগো) অটল তোমার দাড়িয়ে আছে দাড়িয়ে আছে স্বর্ণমঠ
জাগছে আদিগ্রন্থ তোমার ভক্তহিয়ার বাক্যপট।
কখন্ গুরু! জাগবে তুমি?
গ্রন্থ এবং খড়্গ চুমি’
ভারত তোমার শিখ হ’বে গো ভক্ত তেজী নিষ্কপট।