ইল্শে গুঁড়ি

ইল্শে গুঁড়ি! ইল্শে গুঁড়ি!
ইলিশ মাছের ডিম।
ইল্শে গুঁড়ি ইল্শে গুঁড়ি
দিনের বেলায় হিম।
কেয়াফুলে ঘুণ লেগেছে,
পড়তে পরাগ মিলিয়ে গেছে,
মেঘের সীমায় রোদ হেসেছে
আল্তা-পাটি শিম্।
ইল্শে গুঁড়ি! হিমের কুঁড়ি,
রোদ্দুরে রিম্ ঝিম্।
হাল্কা হাওয়ায় মেঘের ছাওয়ায়
ইল্শে গুঁড়ির নাচ।
ইল্শে গুঁড়ির নাচন্ দেখে
নাচ্ছে ইলিশ মাছ।
কেউ বা নাচে জলের তলায়,
ল্যাজ তুলে কেউ ডিগ্বাজি খায়;
নদীতে ভাই! জাল নিয়ে আয়,
পুকুরে ছিপ গাছ।
উল্সে ওঠে মনটা, দেখে
ইল্শে গুঁড়ির নাচ।

ইল্শে গুঁড়ি- পরীর ঘুড়ি,-
কোথায় চলেছে?
ঝুম্রো চুলে ইল্শে গুঁড়ি
মুক্তো ফলেছে!
ধানের বনে চিংড়িগুলো
লাফিয়ে ওঠে বাড়িয়ে নুলো;
ব্যাঙ ডাকে ওই গলাফুলো,
আকাশ গলেছে,
বাঁশের পাতায় ঝিমোয় ঝিঁঝিঁ,
বাদল চলেছে।

মেঘায় মেঘায় সূর্য্যি ডোবে
জড়িয়ে মেঘের জাল,
ঢাক্লো মেঘের খুঞ্চে-পোষে
তাল-পাটালীর থাল!
লিখছে যারা তালপাতাতে
খাগের কলম বাগিয়ে হাতে
তাল্-বড়া দাও তাদের পাতে
টাট্কা ভাজা চাল;
পাতার বাঁশী তৈরী ক’রে
দিয়ো তাদের কাল।

খেজু পাতার সবুজ টিয়ে
গড়তে পারে কে?
তালের পাতার কানাই ভেঁপু
না হয় তাদের দে!
ইল্শে গুঁড়ি- জলের ফাঁকি-
ঝরছে কত বলব তা কী?
ভিজতে এল বাবুই পাখী
বাইরে ঘর থেকে;-
পড়তে পাখায় লুকালো জল
ভিজলো নাকো সে!

ইল্শে গুঁড়ি! ইল্শে গুঁড়ি!
পরীর কানের দুল,
ইল্শে গুঁড়ি! ইল্শে গুঁড়ি!
ঝুরো কদম ফুল।
ইল্শে গুঁড়ির খুন্সুড়িতে
ঝাড়ছে পাখা- টুনটুনিতে,
নেবুফুলের কুঞ্জটিতে
দুল্ছে দোদুল্ দুল্;
ইল্শে গুঁড়ি মেঘের খেয়াল
ঘুম-বাগানের ফুল।