জাফরানের ফুল

ও কি ফুট্ল গো ফুল দিগন্ত ভরি
কারা জাগ্ল ধূসর ধূলি-শয্যা-পরি!
এ কি! ভাণ্ডারে হাট ক’রে ধন লোটানো!
এ কি! চাষ দিয়ে রাশ ক’রে ফুল ফোটানো।

আমি চল্‌ব কি, চল্‌লে যে ফুল মাড়াব,
শেষে সাধ করে ভুল করে দিক হারাব;
আঁখি রঙ্গে পতঙ্গেরি ধায় পিছনে
নীলে ডুব দিয়ে যায় মিলে কোন্ গগনে।

এ কি চঞ্চলতার ডানা বৃন্তে বাঁধা!
একি মূর্চ্ছনাময় গীতি মৌনে সাধা!
এ কি স্নিগ্ধ দীপান্বিতা পাপ্ড়ি আলোর।
এ কি নীল নাগিনীর মরি চক্ষেরি লোর!

ও যে স্বপ্ন জোগায় তবু ঘুম হরেছে,
ও যে ঝিল্লীরই রিম্ঝিমি রূপ ধরেছে!
ও যে বুকভরা প্রাণভরা নীল নিরমল
ও কি অপ্সরী-হস্তেরি রত্ন-ফসল!

ও যে জাগ্‌ল পিয়াস নিয়ে জাগ্‌ল, মরি!
তৃষা মিট্ল শিশির জলে এক্‌লা ওরি,
তনু নীল হ’ল তৃষ্ণাতে লাল রসনা
বুকে বহ্নি-শিখার সনে তপ্ত সোনা!

তবু হর্ষে আপন-হারা মঞ্জু-মধুর
ও যে নিশ্বাসে সিক্ত অনঙ্গ-বধূর,
তারি গন্ধে আনন্দে বিমুগ্ধ মদির
ও যে কস্তূরী কাশ্মীর-স্বর্ণমৃগীর!

ও কি ইন্দ্রেরি অঞ্জলি ইন্দ্রনীলার,
ও কি স্বর্গীয় অর্ঘ্য এ পৃথ্বী-শিলার;
ও কি বুদ্বুদে উদ্ভূত নাগ-সরিতের
ও কি স্বপ্ন-বিভোল্ আঁখি নীল্-লোহিতের!

ও যে মৃত্যু-মদির চির প্রাণ-কণিকা
ধরে সৌরভে বিদুৎ ও ফুল-কলিকা,
ও যে অপ্সরী লয় মরি’ চিত্তহরি,
রাণী জাফ্রাণী সুন্দরী পুষ্প-পরী।