‘জাগৃহি’

পাপ্ড়ি-ঝরা পুরাতনের পাণ্ডুবরণ পদ্মচাকী,-
তার মাঝে কে ঘুমিয়ে আছ,- নয়ন মেল,- তোমায় ডাকি;
জাগ, ওগো! ধূসর ধরার হিরণ-বরণ জীবন-কণা!
জাগ পুরাতনের পুরে নূতনের সম্ভাবনা!

পুরাতনের ডিম্ব টুটে বাইরে এস নূতন পাখী!
নূতন আঁখির আলোক দিয়ে অন্ধকারের ফুটাও আঁখি;
জাগাও আশা নূতন আশা নূতন ছন্দ নূতন গতি
গরুড় যদি না হও তুমি সূৰ্য্যরথের হও সারথি।

শক্ত পাহাড় হচ্ছে গুড়া শক্তুসম পলে পলে
মহাকালের বজ্রকঠোর নিবিড় আলিঙ্গনের তলে।
মৌনমুখে যায় পুরাতন শক্ত-কলস মাথায় ক’রে,
তুমি এস নূতন জীবন! কুম্ভ তোমার সুধায় ভ’রে।

তুমি এস নূতন বর্ষে নূতন হর্ষ! নূতন জ্যোতি।
সর্ষে-পারা বটের বীজে ভবিষ্যতের বনস্পতি।
এস অজয়!- পরাজয়ে, এস অমর! মৃত্যুপুরে;
বস ধূলায়,- আসন পেতে দুৰ্ব্বা-লতার শ্যামাঙ্কুরে।

বিধাতা আর খাতায় মিলে ঘুরায় মুহু অয়ন্-ঘড়ি,
সমীর ফেরে শমী-বনে অগ্নিমন্থ মন্ত্র পড়ি;
প্রাচীন দিনের সূর্য ঢলে প্রলয়-জলে শয্যা পেতে,
জাগ তুমি নূতন সূৰ্য্য! নীহারিকার বুদ্বুদেতে।

পুরাতনের স্তম্ভ চিরে বাইরে এস সিংহতেজে,
জাগ জড়ের সুপ্ত জীবন গোপন শিখায় নয়ন মেজে;
অবিশ্বাসের হোক্ অবসান, তুমিই তাহার নিশ্বাস রোধ’;
অন্তরে হও আবির্ভুত হে আত্মদ! বলপ্রদ!