ঝর্ণার গান

চপল পায় কেবল ধাই,
কেবল গাই পরীর গান,
পুলক মোর সকল গায়,
বিভোল মোর সকল প্রাণ!

শিথিল সব শিলার পর
চরণ থুই দোদুল মন,
দুপুর-ভোর ঝিঁঝির ডাক,
ঝিমায় পথ, ঘুমায় বন!

বিজন দেশ, কূজন নাই,
নিজের পায় বাজাই তাল,
এক্লা গাই, এক্লা ধাই,
দিবস রাত, সাঁঝ সকাল।

ঝুঁকিয়ে ঘাড় ঝুম-পাহাড়
ভয় দ্যাখায়, চোখ পাকায়;
শঙ্কা নাই, সমান যাই,
টগর-ফুল-নুপুর পায়,

ঘাঘ্রা মোর শ্বেত চামর
জরির থান ওড়না গায়,
অলঙ্কার মাণিক-হার,
মুক্ত কেশ,- মুক্তা তায়!
* * *
তুহিন-লীন কোন্ মুনির
ছিলাম কোন্ স্বপ্নেতে!
জন্ম মোর কোন্ চোখের-
কটাক্ষের সঙ্কেতে!

কোন্ গিরির হিম ললাট
ঘাম্ল মোর উদ্ভবে,
কোন্ পরীর টুটল হার
কোন্ কোন নাচের উৎসবে!-

খেয়াল নাই- নাই রে ভাই
পাই নি তার সংবাদই,
ধাই লীলায়,- খিল্খিলাই-
বুলবুলির বোল্ সাধি!

বন্-ঝাউয়ের ঝোপ্ গুলায়
কাল্সারের দল চরে,
শিং শিলায়- শিলাব গায়,
ডাল্চিনির রং ধরে!

ঝাঁপিয়ে যাই, লাফিয়ে ধাই,
দুলিয়ে যাই অচল-ঠাট,
নড়িয়ে যাই, বাড়িয়ে যাই-
টিলার গায় ডালিম-ফাট।

শালিক শুক বুলায় মুখ
থল্-ঝাঁঝির মখ্মলে,
জরির জাল আঙ্রাখায়
অঙ্গ মোর ঝল্মলে।

নিম্নে ধাই, শুন্তে পাই
‘ফটিক জল।’ হাঁক্ছে কে,
কণ্ঠাতেই তৃষ্ণা যার
নিক্না সেই পাঁক ছেঁকে!

গরজ যার জল স্যাঁচার
পাৎকুয়ায় যাক না সেই,
সুন্দরের তৃষ্ণা যার
আমরা ধাই তার আশেই।

তার খোঁজেই বিরাম নেই
বিলাই তান- তবল শ্লোক,
চকোর চায় চন্দ্রমায়,
আমরা চাই মুগ্ধ-চোখ!

চপল পায় কেবল ধাই
উপল-ঘায় দিষ্ট ঝিলিক্,
দুল্ দোলাই মন ভোলাই,
ঝিল্মিলাই দিগ্বিদিক্!