কাজ্‌রী-পঞ্চাশৎ

(১)
(এল) শ্রাবণ ফিরে ভুবন পরে
এল মিলন্-ধাম,
সেই পাপিয়ার পিয়াস-হরণ
সেই যে ঘনশ্যাম।
বিধুর ধরার বন্ধু এল
(আজ) পূরবে মনস্কাম-
(দেখ) দিগ্বিদিকে চিক দিয়েছে
ঝুরণ্ অবিশ্রাম!

(২)
(মেঘ) ভ্রমর হয়ে উড়ল আঁকে
কী কালো ছায়া!
খুললে এখন ঘোটা কে বল্
বল্‌বে বেহায়া?
(ওসে) দিনকে করে মিলন-রাতি
এম্‌নি তার মায়া!
(তার) মনটি ভালো আলোয় ভরা
কালো তার কায়া!

(৩)
(আমরা) ঝুলিয়ে দোলা দুলিয়ে দেবো
বাদল-হাওয়াতে,
পাখীর সুখের জান্ব সোয়দ
পিয়াল্-ছাওয়াতে!
গাইব পাখীর চাইতে মধুর
(ভুবন) ভরব গাওয়াতে,
খেল্‌বে মেঘে বিজুলী এই
চোখের চাওয়াতে।

(৪)
(আহা) লুকিয়ে ছিল ওই বিজুলী
কোন্ কাজল-চোখে!
কালো মেঘের ডাক শুনে কি
উঠল সে চম্কে!
কদম-ফুলে ভাব লাগে রে
(সেই) আলোর পুলকে,
কার পানে কে চায় লুকিয়ে
জান্‌বে কি লোকে?

(৫)
(ও কার) মিলিয়ে গেল নীলাম্বরী
নিবিড় বাদলে!
শ্যামল বনে সঘন সাঁঝে
মেঘের কাজলে!
(ওগো) কোন্ তমালে ঝুল্নো তোমার?
(বল) কোন্ মালা গলে?
(তোমায়) সৌরভে আজ চিন্ব গহন
রসের অতলে।

(৬)
(ওগো) কোন্ বনে আজ বাঁধলে দোলা
গহন আঁধারে!
তোমার গলার মালা কোথায়
গন্ধ বিহারে!
(শুধু) গন্ধে তোমার পাই যে নাগাল
(নীরব) ঝুলন্-সাঁতারে,
(তোমার) রূপ-বিজুলী ডুব দিয়েছে
বাদল-পাথারে!

(৭)
(তুমি) আছ পথে ভূঁই-চাঁপাতে
ভুবন সাজায়ে!
বাদল-ধারায় তাল মিলায়ে
(মৃদু) নূপুর বাজায়ে!
হাসছ তুমি জুঁই চামেলির
পরাণ বাঁচায়ে!
আসছ তুমি পেখম-খোলা
ময়ুর নাচায়ে!

(৮)
(সখী) যখন কেবল শ্রবণ চলে
নয়ন না চলে-
সেই শ্রাবণের আমল এখন
এ রঙ-মহলে।
(আজ) শোন্ গো কেবল দাদুর কী কয়
(আর) ঝিল্লী কি বলে,
একলা পাখী কী গায়- বাদল-
ধারার বিরলে!

(৯)
(আজ) কুঞ্জ-পথে সবুজ কানাৎ
নতুন কে দিলে!
মেঘ-ভম্বরী রঙের তাবু
(ধারা-) জলের ঝিল্মিলে।
আজ বেরুবার নেই মানা আর
সব সখী মিলে,
বাঁশীর সুরে সুর বাঁধা আজ
বাসর-নিখিলে।

(১০)
(আজ) নূতন শাখে বাঁধ্, তোরা সই
নূতন হিন্দোলা,
আজকে হাওয়ার নূতন দুয়ার
হল যে খোলা!
(নব) নীপের দীপে কেয়ার ধূপে
আজ ভুবন ভোলা,
নূতন বঁধুর নূতন-মধুর
কাজ্‌রী উতলা!

(১১)
(ওলো) ঘোটা খোলা সরম ভোলা
আজ বিধির লেখা,
(প্রথম) ভয়-ভাঙার পুলকে প্রাণে
ধ্বনিছে কেকা!
কুল ভেঙেছে যমুনা আজ
(তার) নাই সীমা-রেখা,
(শুধু) ঘনঘটার ঘন্টা রেখে
চল পথে একা!

(১২)
(ওগো) এমন দিনে উদাস মনে
কে ঘরের কোণে?
(এস) আপনাকে আজ লোফালুফি
করব পবনে!
বুক দিয়ে আজ বিঁধব বাতাস
(আকাশ) ঠেক্বে চরণে, কিশোর অনুর সকল অণু
ভরবে শ্রাবণে!

(১৩)
(আজ) যে দোলাতে দুজন কুলায়
সেই দোলা বাঁধিস্,
বন্ধু বিনে, নইলে যে হায়,-
ঠেক্বে সবই বিষ!
মিশ্ কালো ওই মেঘে মিশে
(আজ) ঝুলন অহর্নিশ,
বিজুলী ডোর ধরবে দোলার
উথ্লাবে হরিষ!

(১৪)
(আজ) বাদল রাতির কাজল পাঁতি
এল কার তরে!
পৌঁছে দিল পূবের বাতাস
কাহার অন্তরে!
সজল আঁধার কী বোল্ বলে
(আজ) বিভোল্ অম্বরে!
(হায়) বাঁশীর পাগল বেরিয়ে প’ল
বাজ মাথায় করে!

(১৫)
(আজ) গগন পরে থর দিয়ে কে
গড়লে এ মৌচাক!
কে খোঁচালে হঠাৎ!- ক্ষেপে
ছুটল কিসের ঝাঁক!
ছুটুল রাগে বুদ হয়ে সব
(চাকের) দুয়ার রেখে ফাঁক!
ঝুঝিয়ে ঝরে রসের ধারা
অবাক গো অবাক!

(১৬)
(ওই) মেঘের দেশে রাত হ’ল, দ্যাখ্,
হাওয়ায় লাগে ঢুল!
গুগ্ গুলু উগারে তরল
অপ্রাজিতার ফুল!
নীল কমলে ঢাক্ল ডানায়
কালো ভ্রমরকুল
(যেন) সাপের শেযে গা ঢেকে কে
এলিয়ে দিল চুল!

(১৭)
(ও কে) দোল দিল মোর মনে, ওগো!
তাই দোলে ভুবন!
শ্রাবণ দোলে পবন দোলে
দোলে সকল বন!
হৃদয়-দোলায় চলছে গো কায়
আনন্দ-ঝুলন!
ঝুলন-মাতাল রাগ-রাগিণী
কাজরী-নিমগন!

(১৮)
(এবার) ফুল কিনা কদম বনে
খবর রাখি নে,
শ্রাবণী ফুল ফুটেছে মোর
মনের বিপিনে!
(বঁধু!) আমরা হলাম পুলক-কদম
(তোমার) সোহাগ-সুদিনে,
(মোদের) পরাগ-ভরা এই অনুরাগ
নাও তুমি জিনে!

(১৯)
(গেছে) ঝুল্‌না বেঁধে রাখাল-ছেলে
সকাল-বেলায় আজ,
সেই দোলাতে দুলতে হবে
তোমায় রাখাল-রাজ!
(মোদের) রাই-রাজা পরাবে তোমায়
(আপন) মাথার ফুলের তাজ,
(আজ) হিন্দোলে হিল্লোলে কেবল
টল্‌বে সকাল সাঁঝ।

(২০)
(মোদের) দুপুর-বেলাই ঝুলন্ খেলা
আইন্ মানি নে,
(আজ) ঘনঘটাই ঘোম্টা যে, তাই
ঘোম্টা টানিনে।
কে বিদেশী যায় যে পথে
আমরা জানিনে,
যে খুসী সে হাসুক হাসি
আমল আনিনে।

(২১)
(ওকি!) দোলন্-চাঁপা দুল্ছে হাওয়ায়
দোলন্-চাঁপার ফুল!
(তার) দোলন্ দেখে ঝুম্কো জবা
দুল্ছে গো দোদুল্!
তপ্ত দুধের মাখন তনু
(তারে) দেখলে যে হয় ভুল!
মুখটি কচি কাঁচা-দুধের
ননীর সমতুল।

(২২)
(আমরা) ভালবাসার রূপ দেখিনি
(শুধু) নাম শুনি গো তার।
শুতে যে পাই আওয়াজ বাদল-
ধারায় অনিবার।
চোখ বুজে তার ডাক শোনা যায়
সাত সাগরের পার,
(তার) পরশ পেলে প্রাণ নাকি হয়
গুলাবে গুলজার!

(২৩)
(আজ) তোমার তরে এনেছি এই
সন্ধ্যামণি ফুল,
এই দোপাটি হবে তোমার
দুটি কানের দুল;
চরণ-পিড়ি হবে রাধা-
পদ্ম এ রাতুল,
রায়-বেলে সই সাজাব আজ
তোমার কালো চুল।

(২৪)
(আজ) ঝুলন-দিনে ফুল গহনা,-
সোনা না-মঞ্জুর!
কঠিন সোনা আজকে মানা
আজ রাখ তায় দূর’।
ফুলের কঁকণ ফুলের মুকুট
(আর) ফুলের রতনচূড়,
ফুলের নূপুর বাজবে নীরব
ভরবে হৃদয়পুর।

(২৫)
(ওগো) তোমরা চোখে কাজল দিয়ো
হরিণ-লোচনা!
ওই কাজলে আমরা করি
কাজ্‌রী রচনা।
ওই কাজলে হয় গো সজল
বাদল-জোছনা,
ওই কাজলে উজল হিয়া
লুকায় শোচনা।

(২৬)
(আজ) অন্ধকারে গন্ধ ফুলের
হোলি-খেলার ধুম!
মাদল বাজে বাদল-মেঘে
নাইক চোখে ধুম।
পিচকারী সব ভরছে কেয়া
(আর) কদম সে কুঙ্কুম,
গন্ধে রঙীন্ অঙ্গে হাওয়া
সঞ্চরে নিঝুম!

(২৭)
(তোমরা) দুলিয়ে বেণী ঝুলিয়ে দিলে
রেশ্মী হিন্দোলা!
কুর বটের ঝুরি মোদের
ঝুলনের ঝোলা!
রাজার মেয়ে তোমরা সবাই,
(মোরা) রাখাল মন্-ভোলা!
অ-বোলাকে কয়?
তোমাদের ভারি বোল্বোলা।

(২৮)
(আজ) ঝামর হাওয়ায় তরল মোতি
ফিরতেছে লীলায়!
তাই বুঝি গো মুক্তোঝুরি
তোমার তনু ছায়।
কি দিয়ে কিশোরী! গোরী!
(বল) মুছাই, হায়, তোমায়?
(শুধু) আঁখির পাতা বুলাই, সখী!
তোমার গোরা গায়।

(২৯)
(আহা) এম্নি ভিজে আস্তে কি হয়
ও বাঁশীর পাগল!
(তোমার) সোনার গায়ে মুক্তোসুঁটি
সুটিয়ে পড়ে জল।
ভয় কি গো নেই দেয়ার ডাকে?-
(এই) বিষম ঝড় বাদল!
(ওগো) ভালোবাসার এনি অভয়-
এম্‌নি কি তার বল!

(৩০)
(ওগো) তোমার দোলা কদম-শাখে
আমার তমালে;
কাছে-কাছেই চলছে দোলন্
(তবু) নাইক নাগালে!
ওই আঁচলের আভাস লাগে
এ মোর কপালে!
(তোমার) চুলের রাশি নিশাস ফেলে
নিশির আড়ালে।

(৩১)
(আজ) তোমার আমার মন মিলেছে
মনের মালঞ্চে!
কে জানে আজ দুনিয়া সমাজ
পড়শী পঞ্চে?
অঞ্চলে বেঁধেছি মোরা
(আজ) সাত রাজার ধন যে!
কাঞ্চনে নাই রুচি, চরণ
মাণিকের মঞ্চে!
(আজ) তোমার আমার ফুল ফুটেছে
মনের মালঞ্চে।

(৩২)
(দোলা) দুলল এবার বাদল হাওয়ায়
হারিয়ে দিগ্বিদিক!
দুলবে কে, আর কে দোলাবে
(তার) নাই কিছুরই ঠিক!
ভয়-ভোলা মন ভুল্ছে ভরম
আজ সরমে ধিক্;
(আজ) যে পারে সে দিক ছড়িয়ে
যে পায় লুফে নিক্।

(৩৩)
(আজ) ডুব-সাঁতারে যায় কে চুপে
হার পূর্ণিমায়!
গহন মেঘের ওপার দিয়ে
স্বপন-সীমানায়!
চাঁদ! যেয়োনা অমন করে
(তুমি) পালিয়ো নাগো হায়,
(আজ) আনন্দেরি গন্ধরাজে
পূজ্‌ব যে তোমায়!

(৩৪)
(আজ) কাজল-লতার পাতার পরে
ভ্রমর বুলেছে!
কাজল আঁখির জল্সাতে মোর
কাজ্‌রী খুলেছে!
চন্দনী পরশে হাওয়ার
(আজ) ভুবন ভুলেছে,
হিন্দোলে আনন্দঘন
ছন্দে দুলেছে!

(৩৫)
(ওগো) আজ কোথাকার ঢেউ লেগেছে
সারা গগনময়!
সাগর চুরি করেছে রে,
পুকুর চুরি নয়।
চলছে যখন এমন চুরি
(ওগো) তখন কিসের ভয়?
(আজ) চোরা-চোখে চাইলে, ধরা
পড়বে না নিশ্চয়।

(৩৬)
(বল) শ্রাবণ! তুমি শিখবে কবে
নয়ন বাঁকানো?
ভুলতে তুমি বসেছ চোখ
মেলে তাকানো!
হিম যে তোমার নাকের নিশাস
(তোমায়) যায় না জাগানো,
পান্তা-বাতাস নেবু-ফুলের
গন্ধ মাখানো!

(৩৭)
(আমার) কাজরী গাথার কাজল-লতা
দিব কার করে!
কার দু’আঁখির আপ্‌নি-কাজল
আঁখির ঘুম হরে!
(কার) পায়ের পাতা ছন্দ রচে
(বাদল) মেঘের ডম্বরে!
কার পুলকে নীপ্-মুকুলের
অঙ্গ শিহরে!

(৩৮)
(আমায়) সকল ভুবন দোল দিলরে
জনম জনমে!
দো দিল আনন্দ-বিষাদ
শঙ্কা-সরমে!
দোল দিল কামিনী কুঁড়ি
(মোর) গোপন মরমে!
সূর্য্য-তারার নাগর-দোলার
ছন্দেরি সমে!

(৩৯)
(ওগো) বাদল-মেলার শাঙন-বেলার
আর কত বাকী!
(আমায়) দো দিয়ে গিয়েছে সে তাই
দুল্ছি একাকী!
দুল্ছে দোলা, ভুল্ছে না মন,
মিছাই মুখ ঢাকি,
(হ’ল) আঁখির লোরে ঝামর হাওয়া,-
মেলব কী আঁখি!

(৪০)
(ও তোর) মানের দোলা দুলছে সে কই?
দুলছে মন্থরে!
ডুরি যে তার গেছে কেটে
অলখ্ মন্তরে!
(তোর) এলা-গরব আঁখির জলে
(হায়) আজ যে সন্তরে!
যে কেঁদে যায়, কঁদিয়ে সে, হায়,
যায় জনম-তরে।

(৪১)
(ও সে) স্বপ্নে আমার এসেছিল
কুঞ্জে সজনী!
ছিল সে মোর কুসুম-শেযে
সকল রজনী।
ছিনিয়ে হঠাৎ কে নিল তায়
(হায়) কিছুই না জানি!
(শুধু) শুনছি জেগে দেয়ার হা-হা
আর গরজনি।

(৪২)
(মরি) আজ কে কারে দেব্তা ডাকে
ডাকে গো দেয়া!
দিনের আলোয় দ্যায় যে উঁকি
আকাশ-আলেয়া!
আজ যমুনার জমাট নীলে
(ও কে) জমায় শেষ খেয়া!
গায় কাঁটা দ্যায়, শিউরে ওঠে
কদম আর কেয়া!

(৪৩)
(আজ) জীবন মরণ ঝুলন খেলে,
দোল্ দিয়েছে কে!
সুধা-সুরা-সোম-ধুতুরার
ঢেউ পিয়েছে কে!
(আজ) বাদল-ধারায় জ্যোৎস্না জড়ায়
(হায়) সে রঙ্গ দেখে!
ঝুলন ঝোলে ঝাণ্ডা তালের
ঝঞ্ঝাতে বেঁকে!

(৪৪)
(হায়) অশ্রুজলের শ্রাবণ দেখে
বন্ধু! কোথা যাও?
দাড়াও আবার ঝুলননা বাঁধি।
রথ রাখ, দাঁড়াও!
মাধব! ঐ মাধবী লতার
কুঞ্জ পানে চাও!
(বারেক) গাও বাঁশীতে পাগল গানে
শেষ কলিটি গাও।

(৪৫)
উজান বয়ে চল যমুনা!
চল্ অনুরাগে,
চল নিয়ে ফের তুইরে মোদের
বঁধুর সোহাগে।
চোখের কাজল কানের সোনা
(তোরে) দিব যা’ লাগে,
কাজল-গাথা আঁধার রাতে
গাইব তোর আগে।

(৪৬)
(এবার) হিন্দোল হায় বন্ধ আমার,
বন্ধু মথুরায়;-
বাদল-নিশির আঁধারে মোর
নাইরে প্রদীপ হায়!
(তবু) বাতাস আমায় দোল দিতে চায়,
(ফুল) সৌরভে ভোলায়,
কাজরী সুরে নয়ন ব্যুরে
পরাণ লহরায়।

(৪৭)
(এবার) কুটিলা! তোর ঝুলন হবে,
(আর) করিস্নে তুই রোষ;
কুব্জা হ’ল দোলার বিবি,
তোর হ’তে কি দোষ?
রাই-কমলের দিন গিয়েছে,
(তার) শুকায় হৃদয়-কোষ;
(এখন) কুব্জা-কুটিলার আমল,
আর কিসের আফ্শোষ?

(৪৮)
(আমার) নয়ন-জলের শ্রাবণ এল,
বন্ধু এল না! ঝুলন-দোলায় রইল পরাণ,-
(সুখে) দুল্তে পেল না!
হায়! মথুরা এতই কি দূর?-
খবর গেল না!
যমুনা কি সাগর হ’ল
অশ্রুতে লোণা!

(৪৯)
(তুমি) মোহন বাঁশীর মধুর ডাকে
ডাক্‌লেনা, হায়, আজ;
ডাক দিয়েছে বন্ধু! তোমার
বাজের পাখোয়াজ!
(আমার) ভাব-কদমের ফুল কি ফুল!
(মোর) টুল গো ভয় লাজ!
(তোমার) আওয়াজ পেয়ে বেরিয়ে এলাম
(তুমি) কই গো হৃদয়-রাজ!

(৫০)
(হায়) ঝুম্কো-ফুলের ঝালর-গাঁথা
ঝুলন অবসান,
কোথায় প্রেমী? কোথায় প্যারী?-
ভুবন ব্যবধান!
শূন্য দোলা দুলছে তবু,
চল্ছে তবু গান!
(তবু) বাঁধছে গোকুল-গোলোক-সেতু
কাজ্‌রী অফুরান্!