নস্য

আমার ডিবায় নস্য আছে ভারি চমৎকার!
তুমি কিন্তু পাচ্ছ নাকো একটি কণাও তার।
যা আছে তা আমার আছে দিচ্ছি নে তা’ অন্যে,
এমন নস্য হয় নি তোদের বোঁচা নাকের জন্যে।
নস্যদানে নস্য আছে কিন্তু সে আমার;
তুমি বাপু পাচ্ছ নাকো একটি কণাও তার।

মুরুব্বিদের মুখে শোনা অনেক দিনের গান,
আধখানা তার শুনেছিলাম, শিখেওছি আধ্খান;
সে যা’ হোক্, ঐ গানটা শুনে হ’ল কেমন জেদ,
নস্য আমার নিতেই হ’বে, রাখ্ব নাকো খেদ।
নস্যদানে নস্য আছে ভারি চমৎকার,
তুমি কিন্তু পাচ্ছ নাকো একটি কণাও তার।

এক যে রাজার জ্যেষ্ঠ পুত্র- অনেক টাকার মালিক,
বাড়ীর দ্বারে সিংহ তাঁহার গাড়ীর দ্বারে শালিক!
তিনি আপন কনিষ্ঠকে বল্লেন ডেকে “ভায়া!
কমণ্ডলু নাওগে, দেখ সংসার শুধুই মায়া;
নস্তদানে নস্য আছে কিন্তু সে আমার,
তুমি ভায়া পাচ্ছ নাকো একটি কণাও তার।”

এক মহাজন,- লোকটি পাকা, অর্থাৎ ঝুনো বেজায়,
ঋণ দিলেন এক দায়গ্রন্তে অহৈতুকী কৃপায়!
সুদের সুদটি শুষে নিয়ে বেচে ভিটেমাটি,
ঋণী জন্কে শুনিয়ে দিলেন তত্ত্বকথা খাঁটি,-
“ডিবার মধ্যে নস্য আছে, কিন্তু সে আমার,
তুমি বাপু পাচ্ছ না আর একটি কণাও তার।”

আছেন কত গৃধ্র উকীল, শকুন ব্যারিষ্টার,
বুদ্ধি যোগান্ নির্বোধেদের দয়ার অবতার;-
ফন্দী ক’রে খসিয়ে টাকা শূন্য ক’রে থলি
মক্কেল বিদায় করেন তাঁরা এই কথাটি বলি,
“ডিবার মধ্যে নস্য আছে ভারি চমৎকার,
তুমি এখন পাচ্ছ না আর একটি কণাও তার।”

হীরার কন্ঠী গলায় দিয়ে নাচঘরে যান ক্ষেত্রী,
কন্তীতে তাঁর নেত্র দিলেন একটি অভিনেত্রী;
ক্ষেত্রী কৃপণ মুখ বাঁকিয়ে বল্লে “সোহাগ থাক্,
হয় তোমার পদ্মচক্ষু, বাঁশীর মতন নাক,
দেখ ছ, ডিবায় নস্য আছে, কিন্তু সে আমার,
তুমি ডিয়ার! পাচ্ছ নাকো একটি কণাও তার।”

লাতাঞাঁ।