তোমার আলোকে সৃষ্টি দেখেছি,
তোমারেই শুধু দেখিনি কভু,
অন্তরযামী গোপনে কোথায়
লুকায়ে রয়েছ, হে মোর প্রভু!
দ্যুলোক দুলিছে আলোকে তোমার,
দুলিছে দুলিছে তপনশশী,
রসের ফোয়ারা হয়ে মাতোয়ারা
নির্ঝর ধারা পড়িছে খসি’!
পবনের মত তুমি ভগবন্!
আমরা পবন-ধূনিত ধূলি,
পবনেরে কেহ চক্ষে দেখে না,
দেখে চঞ্চল কণিকাগুলি।
তুমি ঋতুরাজ বিরাজিছ তাই
আমরা এসেছি পুষ্পপাতা,
ঋতুরাজে কেহ চক্ষে দেখে না,
দান দেখে লোক, দেখে না দাতা!
নিগূঢ় গোপন আত্মা তুমি হে,
হস্ত চরণ আমরা সবে,
তুমি চালাইলে তবে চলি মোরা
তুমি বলাইলে বলি সে তবে!
আমরা রসনা, পশ্চাতে তার
তুমি সে প্রজ্ঞা ঋতন্তরা,
তোমারি বিভায় আকাশ আকুল
তোমারি প্রভায় ভুবন ভরা।
তুমি সমুদ্র আমরা তুফান,
তুমি আনন্দ আমরা হাসি;
স্বরূপ গোপন ক’রেছ, হে প্রভু!
লুকাতে পার নি করুণারাশি।
সৃষ্টির কাজে দেখিয়া ফেলেছি,
করুণার মাঝে পেয়েছি দেখা,
কর্ম্মে বচনে অনন্তদেব!
নিশিদিন তুমি জাগিছ একা।
রুমি।