শরতের আলোয় (গান)

(গান)
আজ চোখে মুখে হাসি নিয়ে
মন জানিয়ে-
কার পানে তুই চাস অমন ক’রে?
হ্যাদে লো আমায় বল সখী!
ও কি! ও কি! নিব্ল হাসি-
প্রাণ উদাসী-
চোখের কোলে জল এল ভ’রে
তারে কি বিরূপ নিরখি’!
আহা ডাগর চোখে কিসের দুঃখে হঠাৎ এই ছায়া,
বুঝি প্রেমের ভাতি চিন্লা না কেউ ভাব্ল বেহায়া;
মরি বিষাদে তোর নীল হল মুখ
হা রে হা! বিষ নাহি ভখি’,-
বিমন নিরখি’।

কাল কেয়াফুলের সকল কলাপ-
জর্দ্দা গোলাপ
ঝর্ল হঠাৎ যার পরেশের ঘায়,
সে হাওয়া লাগ্ল কি তোর গায়?
শুকিয়ে এল ঠোঁট দুটি হায়
কাঁপ্ছে যে কায়
হেম-প্রতিমা ছায় রে কালিমায়
সহসা দারুণ কোন্ ব্যথায়?
তুই চোখ তুলে আর চাইতে পারিস, হায় অভিমানী,
বুঝি অকালে আজ মেঘ দেখে তোর নেই মুখে বাণী;
তোর সব সোহাগের নিব্ল আলো
হা রে হা! কার আঁখির হেলায়
দারুণ বেদনায়!

তোর উড়ে গেল ওড়না জরির,
নীলাম্বরীর
কাজল আঁকা আঁচল যায় উড়ে
ফিরে আজ গগন-কিনারায়;
তরল মোতির ঝাপ্টা দোলে
চুলের কোলে,
ঝামর-আঁখি দাড়িয়ে তুই দূরে
যেন কোন্ নিবিড় নিরাশায়!
বাজে বুকের দুরুদুরু মেঘের গুরুগুরুতে
হল ঝর্ঝর্ নয়ন হাওয়ার ঝুরুঝুরুতে
বুঝি না-পাওয়া সোহগের আভাস
হা রে হা! কাঁদায় তোর হিয়ায়
গভীর নিরাশায়।

মরি হারা দিনের হারা হাসির
কুসুমরাশির
আদর সে কি ডুব্ল অতলে?-
বিসরণ- গহন বাদলে!
চেনা চোখের অচিন্ ভাতি
জ্বালবে বাতি
বিমুখ হিয়ায় মেঘ্লা মহলে,
না রে না, ডুব্বে না জলে!
সখি, তড়িৎ হেসে মেঘ মিলাবে ওই দিঠির আগে,
ও যে ধারায় রোদে হর্ষে কেঁদে বাঁধ্বে সোহাগে,
ফিরে আদরে তোর ছাপায় গগন
হা রে হা সাগর উথলে
হিয়ার অতলে।