এবারের দুর্দশার কথা

এবারের দুর্দশার কথা
কইতে মনে লাগে ব্যথা
খোরাক বিনে যথা-তথা মানুষ মারা যায়।।

কেউ মরেছে অর্ধ মরা
একেবারে বুদ্ধিহারা
হইয়া পাগলের ধারা ঘুরিয়া বেড়ায়।
হায় রে হায় খোরাক বিনে
শুকায় অঙ্গ দিনে দিনে
মায়ের বুকে সন্তানে দুগ্ধ নাহি পায়।।

দেশেতে মজুরি নাই
মজুরের কপালে ছাই
ভিখারির ভিক্ষা নাই সবের দরজায়।
রাড়ি বুড়ির দুঃখের চিন
গ্রামে গ্রামে চাউলের মিশিন
ধনী মানীর রঙের দিন এই বাঙলায়।।

এমন আছে অনেক জনা
সপ্তায় এক দিন অন্ন পায় না
কত অখাদ্য ভক্ষণ করে পেটেরই ক্ষুধায়।
সরকারের চক্ষে যখন
ভেসে উঠল এই বিড়ম্বন
কুড়ি টাকা চাউলের মণ কন্ট্রলে বিকায়।।

অনেকেরই পয়সার অভাব
এতে তাদের হলো না লাভ
তারা শুধু বসে আছে রিলিফের আশায়।
সরকারের বিবেচনা
বসাইলেন লঙ্গরখানা
ডাইলে চাউলে একবার খানা প্রতি রোজ খাবায়।।

এবারের অভাবের ধারা
ঠেকছে শুধু মজুর যারা
সরকারের সাহায্য ছাড়া নাই কোনো উপায়।
জনাব মৌলানা ভাসানী
কাঙালের বন্ধু তিনি
চিন্তা করেন দিনরজনী গরিব দুঃখীর দায়।।

আদর করে পরোয়ারে
সৃষ্টি করলেন মানবেরে
সেই মানব আজ অনাহারে প্রাণে মারা যায়।
কেউ নহে কার সঙ্গের সাথি
ভাইর দয়া নাই ভাইয়ের প্রতি
ঘটাইল এই দুর্গতি লোভলালসায়।।

বাউল আবদুল করিম বলে
কেউ ভাসে নয়নজলে
কেউ আছে রঙমহলে ফুলেরই শয্যায়।
শূন্য করে পরার বাড়ি
জমাইয়া টাকা কড়ি
যাবার বেলা একাশ্বরি শুধু হাতে যায়।।