জানালা থেকে

নির্জ্ঞান যেন এক দীর্ঘ সমতল
যার দিগন্তে নেই কোন চূড়া-
আর আমি যেন সারাটা গ্রীষ্মকাল
তার ওপর দিয়ে হেঁটে গেলাম নিঃশব্দে, একা

যেখানে আঘাটার অপ্সরীবৃন্দ অপেক্ষায় স্পন্দিত হয়
গল্পের হলদে পাতার বাগানে আর নেশা-পাওয়া হাওয়া
আসে যেন ভ্রমরেরও আগে
এবং বাউলের একতারার মত বেজে ওঠে চাঁদ,
অমাবস্যায় গোলাপঝাড়ের মত পুঞ্জ পুঞ্জ জোনাকি
ভরে রয় রাত্রির ময়দানগুলো জুড়ে;
এবং যুগল পিদিমের মত মা’র চোখের আশ্বাসের আলোয়
তরুণ ঘোড়ার পিঠে দ্রুত পেরিয়েছি শৈশব, কৈশোর।

কিন্তু দৃষ্টিহীন আকাশ ক্রমে নেমে এল
বিস্বাদে পীতাভ
এবং গেঁথে রইল জানালার মরচে-পড়া সারি সারি শিকে
যেন আমার মৃত অশ্বের ছাল টানিয়েছে কেউ
অকরুণ রোদ্দুরে।
আর আমি অপরিসর শয্যার চৌদিকে
অস্তিত্বের সীমা টেনে
দীর্ঘশ্বাসের কালোফুলে সাজাবো স্মৃতির বাসর।
নিঃসঙ্গতাকে যৌবনের পরম সুহৃৎ জেনে
তার সহোদরা কান্নার বাহবন্ধে সঁপে দেবো
স্বপ্নের সত্য আর সত্তার সার
এবং আমার জানলা থেকে
নিরুপায় একজোড়া আহত পাখির মত চোখ
রাত্রিভর দেখবে শুধু
দূর দর-দালানের পারে
আবছা মাঠের পর নিঃশব্দে ছিন্ন ক’রে জোনাকির জাল
ছুটে গেল যেন এক ত্রস্ত ভীত ঘোড়ার কঙ্কাল!