কবিতাই আরাধ্য জানি

কবিতাই আরাধ্য আমার, মানি; এবং বিব্রত
তার জন্য কিছু কম নই। উপরন্তু আছি পড়ে উপাধিবিহীন, জানি
বাণিজ্যে বসতি যার সেই মা লক্ষ্মীর সংসারেই উম্মূল, উদ্বৃত্ত, তবু
কোনমতে টিকে-থাকা, যেন বেঢপ ভূমিকাশূন্য তানপুরা।

উপরন্তু গ্রাম্যজনে যেই গান চায় কিংবা গায়, ইদানীং ওহে
তা’ কেউ জানে না আর, জানার উপায় নেই বলে?
কেননা যে আছে
হাত-পা ছড়িয়ে বেণুবনে, রুক্ষচুলে, শুকনো মুখে
ফেলে সে দিয়েছে
আনমনে, সোনালি, নিটোল বাঁশিখানি, কোলের ওপরে হাত
ভারী হয়ে পড়ে আছে, মরা, একেবারে মরে-যাওয়া ম্লান খরগোশ।
কিন্তু সতেজ পাতার মতো তার কান, কর্ণকুহরে কুহক, ঘন্টাধ্বনি
দূর শহরের,
তাই আর খোঁজে না সে কাঁটাবনে, হৃৎপিণ্ডের ত্রস্ত-স্বপ্নে দ্রুত
কি করে ঝরে গেল, পড়ে গেল, নড়ে গেল হাত, হাতের বাঁশরী
-গেঁয়োমুখে নাবালক ভয় শুধু, উদ্বিগ্ন বিষয় আর এক
অসম্ভব দাবি,
বোঝে না সে জীর্ণ কথার মতন পচে যায় গ্রাম্যগাথা সব
ম্লান শব্জীক্ষেতে।
ফেরার উপায় নেই; সহযাত্রীর হৃদয়ে নেই আর রাস্তার সংকেত,
পুরোনো লণ্ঠন
পিতামহের হা-খোলা, মৃত, হলুদ চোখের মত দ্যুতিহীন,
দেখায় না পথ।
ধ্বংসের বিপুল গুণে দেখা যায় মসজিদের বিদীর্ণ ধাপ
নেবে গেছে খাদে।