আদিম স্মৃতির মতো

এখন নিশুত রাত, ঝিঁঝি ডাকে; দোর এঁটে একা অন্ধকারে
বসে আছি, কে জপায় মন্ত্র চুপিসারে
বারে বারে? ক্রিসমাস গাছের মতোই অগোচরে
কী যেন একটা দ্রুত বেড়ে ওঠে আমার ভেতরে
এবং চৌদিক থই থই
পবিত্র অনলে; কে আমাকে ডাকে দূরে? থাকবোই
যথারীতি অনড় অটল,
এ-কথা যাবে না বলা। আমি তো স্ববশে নেই; জল,
পাথরের বুক চিরে আসে
কী উদ্দাম, কে রুখবে তোড়? মোহন বিরোধাভাসে
মজে আমি ভিজিয়ে শরীর
দেখি লোকচক্ষুর আড়ালে জাগে পুণ্য প্রতিমা নিবিড়
নক্ষত্রের নীড়ে; তবে
আমি কি গড়েছি তাকে অন্তর্লীন অচিন বৈভবে?
নাকি অন্য কেউ,
আমার ভেতরে যার বসবাস, জাগিয়েছে ঢেউ
চড়াময় মরা গাঙে পূর্ণিমার বিশুদ্ধ প্রভাবে?

সাঁতার কাটছি বলে মনে হয়; প্রকৃত প্রস্তাবে
একটি স্রোতের চোরা টানে উদ্দাম চলেছি ভেসে
নিরুদ্দেশে।
অন্তর্গত দেবতা না ছলনাপ্রবণ শয়তান
বীণার ঝংকারে তোলে তান
যখন যেমন খুশি? যার কণ্ঠস্বর
আমাকে নিজের মধ্য থেকে টেনে আনে, ঢের বেশি শক্তিধর
সে আমার চেয়ে; যুগ-যুগান্তের শত কণ্ঠ জাগে
তার কণ্ঠস্বরে, যা ছড়িয়ে পড়ে নদীস্রোতে, ফুলের পরাগে,
পাহাড় চূড়ায়, রূপ তার ক্রমাগত
আবছায়া থেকে সমুত্থিত আদিম স্মৃতির মতো।