আমাকে বাঁচায়

নিউইয়র্কের নিঝুম এলাকা উডসাইডে ক’দিন
আছি স্বদেশের মুখ না দেখে; পাশেই
অনেক মার্কিন পরিবার। দেখাশোনা,
সুপ্রভাত ব’লে কোনো আলাপের রেণু
ওড়াবার অবকাশ নেই।
নিজের মধ্যেই আছি ডুবুরীর মতো।
কখনো স্বপ্নের জলমগ্ন লতা-গুল্ম ক্ষিপ্র মাছ, কারো স্মিত মুখ
সত্তা ছুঁয়ে যায়।
কেন এই পরবাসে শ্বেতাঙ্গ কি প্রবল কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের
অন্তরঙ্গ আসরে আমার নেই ঠাঁই? কেন আমি
বহিরাগতের চিহ্ন নিয়ে
ম্যানহ্যাটানের পথে হাঁটি,
সাবওয়ে পাড়ি দিই আলো আঁধারিতে? কেন কেউ
‘এসো ভাই’ ব’লে্‌
বসায় না পাশে? মৃদু হেসে
নিমেষে ওঠে না মেতে মধুর আলাপে? এরকম
নৈর্বক্তিক পরিবেশে কীভাবে নিঃশ্বাস নিই? এই বিচ্ছিন্নতা
কেবলি গুমরে ওঠে মনের ভেতর।

ফেরাই স্বদেশে মুখ ক্ষণে ক্ষণে, স্মৃতিসমুদয়
আমার হৃদয় ঘিরে রঙিন মাছের মতো কেলিপরায়ণ
ধানমন্ডি, শ্যামলী, মাহুৎটুলি, আওলাদ হোসেন লেনের
রূপ কী স্নেহার্দ্র ফুটে ওঠে
নিউইয়র্কের প্রেক্ষাপটে। ভালোবাসা
এমন হৃদয়হীনতায় আমাকে বাঁচায়।

নিউইয়র্ক, ৭ সেপ্টেম্বর ৯৫