আমার মানস-সরোবর

আমার মানস-সরোবর কয়েকটি পাখি ভাসে,
নরম সাঁতার কাটে, ডুব দেয়, ডানা ঝাড়ে আর
পিঠের পালকে মাথা গুঁজে নিদ্রা যায়
কখনও সখনও, দ্যাখে রৌদ্রছায়া, ঘাস,
গাছপালা, আকাশের উদার নীলিমা;
কখনওবা ভয়ার্ত তাকায় কাছে-দূরে।

কী-যে হয়, আচানক কতিপয় লোক,
উদ্ভট পোশাক গায়ে, খল দৃষ্টি, বড় হিংস্র ভঙ্গি;
কুৎসিত লোমশ হাত বাড়ায় কোমল
পাখিদের দিকে, টুঁটি চেপে
ধরার নাছোড় তাড়নায়। পাখিগুলো
প্রবল ঝাপ্টিয়ে ডানা উড়ে যেতে চায় শূন্যতায়।

আমি কি পারব এই বিবেকবর্জিত দস্যুদের
নিরস্ত করতে আজ রক্ত গোধূলিতে?
পারব কি উপদ্রুত কিন্তু অনুপম
পালক সজ্জিত প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতে?

যদি ব্যর্থতার কালি আমার মুখের
রেখাবলিকেই আরও কালো এবং করুণ করে,
তাহ’লে মানস-সরোবর শূন্য আর দ্যুতিহীন
হয়ে যাবে, অপরূপ জল
হবে কর্দমাক্ত, আমি নিজে
ভীষণ নিষ্প্রভ এক উদ্ভিদে রূপান্তরিত হব!

কী ক’রে নীরবে নেব মেনে
নিজের এমন পরিণতি? এই ক্রূর দুর্বিপাকে
গোলাপ, ভ্রমর, কুন্দকলি, জোনাকি এবং শ্যামা
সবাইকে সৌন্দর্য-বিধ্বংসী
লোকদের বিরুদ্ধে নির্ভীক প্রতিরোধ
গ’ড়ে তোলবার দৃঢ় আহ্বান জানাব।

১২.৪.৯৭