বাকবাকুম বাকবাকুম

যেখানে তোমাকে দেখতে পাওয়ার কথা নয়,
ইদানীং সেখানেই তোমার আনাগোনা।
বলতে পারো,
‘আমার কোনো ঠিকঠিকানা নেই,
যখন যেখানে খুশি নির্মাণ করি আস্তানা
নদীতীরে, পাহাড়ে জঙ্গলে, জনগণমনগুঞ্জরিত
বসতিতে।
প্রথম যখন তোমার কথা ভেবেছিলাম সেই
সুদূর কৈশোরে, মনে পড়ে, তখন
তোমার একটা ছবি ফুটে উঠেছিল মনের গভীরে।
প্রমোথিউস, হ্যাঁ, সেই অতিকায় পুরুষ
যে দেবতাদের চোখে ধুলো দিয়ে
মর্ত্যের জন্যে এনেছিল আগুন, তার সঙ্গে একাত্ম করে
দেখতে শিখেছিলাম।

ভাবতে অবাক লাগে, লেনিন যার চোখে চোখ রেখে
হয়ে গিয়েছিলেন অন্যরকম মানুষ,
যার হাত ধরে মাইলের পর মাইল হেঁটে গেছেন
চেণ্ডয়েভারা বলিভিয়ার জঙ্গলে, যার উদ্দেশে
স্তোত্র রচনা করেছেন নেরুদা, যার প্রতীক্ষায় অত্যন্ত জাগর
এক কিশোর কবি ক্লান্ত হতে তার পোকা-খাওয়া
ফুসফুস নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো হাসপাতালের বেডে,
সে আজ বেপাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, মহজনদের
পাপোশে পা ঘষছে,
হেঁ হেঁ করতে করতে মায়াবী চেক পুরছে
নিজস্ব পকেটে। শোখিন ড্রইংরুমে মদের গেলাশ হাতে
গোলাপি ছন্দে বাকবাকুম বাকবাকুম করছে।