বিচ্ছেদের ভার

দুঃখ হলো, বড় দুঃখ হলো তোমাকে ওভাবে হেঁটে
যেতে দেখে মঞ্চের উদ্দেশে। জানতাম
পরাস্ত দেবদূতের মতো
তোমার ডানায় অপবাদের কর্দম, তাল তাল, নিয়ে তুমি
অপ্রস্তুত আসবে নেমে। ইচ্ছে হয়েছিল
আগলে দাঁড়াই পথ, এখানে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।
ততক্ষণে তুমি পৌঁছে গ্যাছো
মাইক্রোফোনের মুখে, যেমন একাকী পাখি ফাঁদে।

যে আশংকা সেই কবে থেকে কুরে কুরে
খাচ্ছিল আমাকে, অবশেষে তা ই হলো, অমাবস্যা করে গ্রাস
আমাকে হঠাৎ, তুমি ঠিক ঝাউপাতা
হয়ে কেঁপে কেঁপে লোক হাসালে সভায়।

জানতাম তুমি পড়বে না সে কবিতা, দ্যুতি যার রূপবতী
তন্বীর দৃষ্টির মতো, যার নিরালায়
অমর্ত্য ফুলের স্মিত সুবাস ছড়ানো থাকে, যার
টোকা শুনে খুলে যায় স্বর্গের কপাট। কণ্ঠস্বর
হৈ-হল্লায় ডুবে যাবে ভেবে ভুল নির্বাচনে নিজেকে জড়ালে
অবলীলাক্রমে, গলা ফুলিয়ে সরিয়ে
কোকিলকে খুব দূরে ডেকে এনে কাদাখোঁচাটিকে
নাচালে তুমুল।

একলা দাঁড়িয়ে মঞ্চে তুমি
তোমার নিজস্ব কথা বলতে পারোনি, আমাকে যে
ভালোবাসো, বেহিশেবী জুয়াড়ীর মতো
আমার উদ্দেশে ফেলো সব দান, সে কথাও হায়
মুলতুবি রেখেছিলে, লোকলাজ গিলে খেলো তোমাকে এবং
তাচ্ছিল্যের ফুঁয়ে ওড়ে আমার একান্ত অশ্রুপাত।

এ রক্তক্ষরণ ফুসফুসে নিয়ে বসে আছো একা
চুপচাপ কবিতা মেলায়
তা আমার জানা আছে কিছু;
আর দশজন জানতে ও চাইবে না, মেলা ভেঙে
গেলে পরে যে যার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে,
তুমি আর আমি পাশাপাশি হেঁটে যাবো। আমাদের
নির্দিষ্ট গন্তব্য নেই, শুধু
বিচ্ছেদের ভার বওয়া আছে, আছে হ্রস্ব পর্যটন।