বস্তুর আড়ালে

শব্দ আছে এই ভুবনে,
শব্দ আছে হরেক রকম। অনেক দিনের
চেনা-জানা। আবার এমন শব্দ আছে
অচিন পাখির মতন যারা
লুকিয়ে থাকে পাতায়-ছাওয়া
ফাঁক-ফোকরে। প্রতিবেশী রোদ্রছায়ায়
বেশ তো আছে শব্দাবলী।
এই যে দেখুন বস্তুগুলো
ছড়িয়ে আছে চতুর্দিকে-সবাই এরা
শব্দ নামে পরিচিত। শব্দ ছাড়া
আর কিছু নয়। ধরুন এটা
কিংবা ওটা, মানে শহর-
তলির গলি, দীর্ঘ সাঁকো-আসলে সব
বাংলা খোঁজে শব্দপুরে।

কবুল করি, এখন আমি
হাঁটতে গিয়ে, ভয়েই থাকি সকল সময়।
সবখানে আজ পা রাখি না, কখন পাছে
আমার দ্রুত পদাঘাতে
ছিটকে পড়ে চতুর্দিকে
যাবতীয় শব্দাবলী। এখন দেখি
পথ চলাটাই বিড়ম্বনা।
এখন আমি এই শহরে
নজর রাখি চতুর্দিকে। সবখানে আর
পা ফেলি না। ঐতো ব্যস্ত পথের মোড়ে
শক্ত পিচের কারা ভেঙে
হঠাৎ ফোটে রক্তগোলাপ
একটু হলেই মাড়িয়ে দিতাম, হায়রে আমি
অমন পেলব শুচিতাকে।
অনেক কিছু ঘটে গেছে
এই শহরে। এমন কিছু যেসব শুধু
শব্দ দিয়ে যায় না বলা। বলতে গেলে
শব্দ যেন বোকা-সোকা
লোকের মতোই থতোমতো।
শব্দ তখন রুগ্ন খোঁড়া হাঁসের মতো
হোঁচট খেয়ে বিড়ম্বিত।
এই যে ক’টি হাড়ের পিছে আমার আপন হৃদয় আছে, সেকি তবে
শব্দ শুধু? কিংবা কোনো দুঃখী বুকের
শূন্যতাকে শব্দ দিয়ে
যায় কি ঘেরা?