চার কন্যার কাহিনী

এতকাল পরে অবেলায়
এমন একটি দিন আসবে জীবনে, এরকম
আশা আমি করি নি কখনো। এক ঘরে
তখনো চায়ের পেয়ালায়
দিই নি চুমুক, বিকেলের মুঙ্কুম চৌদিকে, আর
হঠাৎ চমকে দেখি ঘরের ভেতরে
কামরুল হাসানের আশ্চর্য ডাগর তিন কন্যা ঢুকে পড়ে শরীরের
গহীন গাঙের ঢেউ তুলে।

হলদে শাড়ি আমার মাথর শাদা-কালো চুলে চালায় আঙুল
লাল শাড়ি চুমুক গোলাপ
ফোটায় আমার ঠোঁটে, নীল শাড়ি সুডৌল বাহুর
অন্তরঙ্গ মুদ্রায় জড়িয়ে ধরে, যেন
ওরা তিনজন
গ্রামীণ শরম ফেলে রেখে সুদুর দিঘির
ঘাটে মেঘ মেঘালিতে উড়ে উড়ে
এসেছে শহুরে ফ্ল্যাটে এই ছোট ঘরে। কী ক’রে এখানে এসে সব
ওলোট পালট ক’রে দিলো।

অকস্মাৎ তিন কন্যা গেলো চ’লে, যেমন আকাশে
চকিতে মিলিয়ে যায় বিদ্যুল্লতা; ঘরে
রইলো প’ড়ে কাঁখের কলস, আসশ্যাওড়ার ঝোপ,
প্রগাঢ় সবুজ কলাগাছ। ঘরময় নিসর্গের
এ বর্ণালি নিয়ে কী করবো
ভাবছি যখন,
তখুনি আরেক কন্যা, বহু যুগ আগে যেন তার
সঙ্গে হয়েছিলো দেখা, ঘরে এসে ঢোকে, তাকে
গলায় পাপিয়া তার কণ্ঠ ধার দেয়,
বলে সে, দ্যাখো তো পারো কিনা
চিনতে আমাকে এতকাল পরে। তার কণ্ঠ শুনে
বুকের ভেতরে জেগে ওঠে বহুকাল
আগেকার গান
তুমি তো চতুর্থ কন্যা’ ব’লে যে-ই তার দিকে
এগোই, পেছনে স’রে গিয়ে গোধূলির
হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে যেতে বলে, ‘ভুল
কেন বলো, আমিই প্রথম’।।