চিরকাল শুধু

খুব বেশি কিছু চাই কি আমার? আমি কি এতই
লোভাতুর শুধু চাই বলে কাটাই প্রহর?
সত্যি বলছি, বিশ্বা করো, কখনো আমার
তেমন কিছুর দরকার নেই। সাজানো গোছানো
ঝকমকে বাড়ি, ঘুরে বেড়ানোর চকচকে গাড়ি
চাই না কিছুই। পথে যেতে-যেতে আচমকা পাবো
ফুলের গন্ধ, গ্রামে ফেলে-আসা পূর্ণিমা-রাতে
হীরের দ্যুতির মতো পুকুরের হাসি-হাসি পানি
ছলকে উঠবে স্মৃতির কিনারে, ছোট বোনটিকে
মেলায় হারিয়ে পুনরায় ফিরে পাবার চমক,
দূর থেকে ভেসে ঢেউ-হয়ে-আসা বাঁশির রাগিণী,
আমার সাহসী বন্ধুর কারাবাসের অন্তে
তাকে বুকে চেপে ইতিহাস পুরে হাতের মুঠোয়
ঘরে ফিরে আসা, শুধু এটুকুর আছে প্রয়োজন।

এটা কি তেমন বেশি কিছু চাওয়া? মাথার ভেতর
চাঁদের মধুর মদির আগুন নিয়ে প্রাণ ভরে
শব্দ ছন্দ বানানোর খুশি, মায়ের পুরানো
শালের বাইরে ফুটে থাকা দুটি কল্যাণী হাত
দেখার তৃপ্তি, মধ্য রাতের বিজন প্রহরে
ঘুম ভাঙা চোখে জানালার ধারে নিঝুম দাঁড়ানো,
একটু আগেই তোমাকে স্বপ্নে ছুঁয়ে, প্রীত হওয়া,
সন্ধ্যার মতো দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টিতে স্নান,
পাতায় পাতায় ফেরেশতাদের মৃদু করতালি,
শ্মশানের পাশে বন কুসুমের ফিক করে হাসা;
আর কিছু নয়, তোমার বাসার সিঁড়ি ভেঙে ওঠা,
চিরকাল শুধু তোমাকে পাবার ব্যাকুলতা থাকা।