চরিত্রলিপি

অধ্যাপক ক্লাসরুমে রবি ঠাকুরের জীবনদেবতা নিয়ে
ইনিয়ে বিনিয়ে
বরাদ্দ বক্তৃতা করছেন,
যেন রঙবেরঙের তালি দেয়া জামা,
কেউ কেউ শাঁসালো মক্কেল, কেউ ধামা
ধরেছেন বড় সাহেবের। শুক্রবার
মসজিদে একনিষ্ঠ ইমাম খোৎবা পড়ছেন,
শুনতে ইমানদার ভক্তিভরে সফেদ টুপিতে মাথা ঢেকে;
অবসরপ্রাপ্ত প্রৌঢ় ভোরবেলা থেকে
সন্ধ্যে অব্দি চার ফেলে প্রায়শই রুই আর কাতলা শিকার
করছেন। বছর না ঘুরতেই তিন লাফ
দিয়ে ঠিক তিনবার বাড়ল সোনার দাম, তবুও সোনারু
নিত্য গড়ে কিমতি গয়না রাশি রাশি, দিচ্ছে ঝাড়
প্রথামতো ঝাড়ুদার, রাস্তা হচ্ছে সাফ
প্রতিদিন। ফিল্মের নায়ক পরচুলা পরছেন,
বাঁকা তলোয়ার নিয়ে জোর লড়ছেন
পাহাড়ি টিলায় কিংবা কক্সবাজারের দীর্ঘ বিচে,
কখনো এলাহি লম্ফ দিয়ে সাত মহলের নিচে
পড়ছেন নিখুঁত অক্ষত। কতিপয়
বক্তৃতাবাগীশ নড়ছেন চড়ছেন অদৃশ্য সুতোর টানে,
মনে হয়
দেখছে সবাই চমৎকার পাপেট শো সবখানে।

অথচ এখনো আমি সুড়ঙ্গের ভেতরে একাকী
আমার নিজের মুখোমুখি বসে থাকি
অন্ধকারে। কিছু ধড়িবাজ, যেন জন্মান্ধ বাদুড়, অট্রহাসি
হেসে বলে, ‘বাজাও হে বাঁশি
নটবর যত খুশি প্রহরে প্রহরে’,
এবং আমার ওষ্ঠে বিষপাত্র ক্ষিপ্র চেপে ধরে।