চোরকুঠরির বাসিন্দা

তার মগজের কোষে মধু নেই ঝরবে যা মৃদু ফোঁটা ফোঁটা
শহরের ঠোঁটে।
পায়ে তার স্পর্শ নেই নক্ষত্রের, দেখামাত্র চমকে ওঠার
মতো নয় কিছু, স্মার্ট সুমসৃণ, রকজ-দুরস্ত
জামা গায়ে, পায়ে চোখা চকচকে জুতো-
প্রফুল্ল পড়শি বলে মনে হবে কিংবা কোনো সুদূর স্বজন।
প্রত্যহ কামায় দাড়ি, বাস স্টপে দাঁড়ায় কখনো,
কখনোবা ঘোরে বাণিজ্যিক এলাকায়, ট্যাক্সি চেপে
হাওয়া খায়, যায় সিনেমায়।

‘এবার শহরে বেশ গোলাপ হয়েছে…ভদ্রলোক
আখের গুছিয়ে নিয়ে ধ্যানস্থ এখন…মাড়ি ফুলে
গেছে ভায়া… মাতাহারি রমণীয় গোয়েন্দা ছিলেন…
সর্দি সারছে না কিছুতেই…
এসব কথার মাছ কেলিরত তারও
মুখের পুকুরে।

কখনো সে স্বপ্ন দ্যাখে-অন্ধকার সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে
নিজে নেমে যায় ক্রমে। চোরকুঠরির শীতলতা
মজ্জায় প্রবেশ করে। দরজা, জানালা বন্ধ সবি;
গোলকধাঁধায় ঘোরে, ফ্যাকাশে মুখের
ভিড় চতুর্দিকে।
প’ড়ে যায় ঊর্ণাজালে, যেন সে বিপন্ন
মাছির চেয়েও ক্ষুদ্র, অসহায়। কখনো বিস্তর যাত্রাশেষে
পৌঁছে যায় ভুল ঠিকানায়, কখনোবা
ঘুমায় অস্পষ্ট কৌচে মেদুর চাদর মুড়ি দিয়ে।

তীক্ষ্ণ ছোরা তার বড় শোণিতপিপাসু আর তার
পিস্তল ধোঁয়ায় ঘন ঘন।
অথচ আবার সে-ও টববন্দি রজনীগন্ধার
চোখে রাখ চোখ,
কুকুরছানার মুখে দেয় পেতে সুখে
দুধের পাত্তর।