দরজা কখন খুলে যাবে

অবশেষে অপরাহ্নে দাঁড়ালাম এসে কায়ক্লেশে
কারুকাজখচিত বিশাল
দরজার কাছে আর নিমেষেই সৌন্দর্যের ছায়া
নক্‌শা হয় মনের ভেতরে। স্তরে স্তরে
গুপ্তধন থেকে ঠিকরে-পড়া বিভা কল্যাণের মতো
জেগে থাকে, মনে হয়। দরজার জ্যোতি,
সত্তাময় ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকি একা।
রঙিন মেঘের বুকে সন্ধ্যা ঝুঁকে আছে
লাজুক আঙ্গিকে;
এখনো দাঁড়িয়ে আছি, দরজা খোলে না।
নিশীথের বনে সুখে হরিণ হরিণী
ঘুমিয়ে পড়েছে। পর্যটক বাতাসের
স্পর্শে পাতাদের গীতস্পৃহা মঞ্জরিত হয় আর
আমি চেয়ে থাকি কারুকাজময় দরজার দিকে,
অর্গল নিঃসাড় তবু।
আমার চোখের পাতা সীসে হতে থাকে ক্রমাগত,
তবে কি এখানে আমি দরজার কাছে
নিজস্ব মাদুর পেতে শুয়ে থাকবো একাকী কিংবা
নিঃশব্দে থাকবো ব’সে বেগানা ধূলায়?

দরজা দাঁড়িয়ে আছে ঠায়
সীমাহীন উদাসীনতায়। অনেকেই ফিরে গেছে,
কেউ কেউ কৃপাপ্রার্থী মানুষের মতো
ভঙ্গিমায় বসে থাকে কিছুকাল ডানে আর বামে,
তারপর চ’লে যায় হতাশার কালো
পেরেকে আমূল বিদ্ধ। বন্ধ দরজায়
করাঘাত করে করে অবসন্ন আমি-
অথচ যাইনি ফিরে, অকস্মাৎ দরজা কখন
অনিবার্যভাবে
খুলে যাবে, কেউ তা জানে না।