একটি এপিটাফের খসড়া

ভোরবেলা পথে হেঁটে যেতে যেতে আচানক ঘন কুয়াশায়
ঢাকা পড়ি না জানি কোন্ সে জাদুবলে! এমন তো
হওয়ার ছিল না কথা গ্রীষ্মকালে। প্রায়
অন্ধের মতোই অসহায় আমি পথ
হাতড়াতে থাকি ক্রমাগত, কী করবো
ভেবেই পাচ্ছি না আর মাথার ভেতর আজগুবি ছবি কাঁপে!

আমি কি উন্মাদ হয়ে যাবো? নাকি অজ্ঞান হয়েই
থাকবো এখানে এই বিরানায়! হতাশায় কব্জায় আটকে
পড়ার আগেই হেঁটে যেতে হবে পেরিয়ে সকল
বাধার কুটিল ফাঁদ। থামবো না যতক্ষণ প্রাণে
স্পন্দন বজায় থাকে। ভেঙে
পড় ক মাথায় আসমান, ঝাঁপিয়ে পড় ক বন্য পশু, তবু
আমাকে যেতেই হবে, নইলে কী করে
নিজেকে দেখাবো মুখ আরশিতে কোনও দিন আর?
দূর থেকে, মনে হয়, কে যেন ইঙ্গিতে ডাকে আমাকেই; যাবো
কি যাবো না মনস্থির করার আগেই
ছায়া-মূর্তি উবে যায়। পুনরায় হতাশায় ডুবে
কুয়াশায় মিশে ব’সে পড়ি অনুমানে হিজল গাছের নিচে।

কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি কিংবা পড়িনি, সে-কথা না ভেবেই
গাছতলা ছেড়ে ফের যাত্রা শুরু করি
অজানার পথে, হায়, বস্তুত কখনও প্রথামতো
সিদ্ধান্ত করিনি স্থির। যখন যা ইচ্ছেমতো ক’রে গেছি তা-ই
এলোমেলো, পরিণামহীন কঠোর জুয়ায়, ফলে
এ জীবনে জমেছে কত-না কালো মেঘ, বয়ে গেছে চোরা ঝড়!

আমার দরজা থেকে কিয়দ্দূরে এখনও নেকড়ে ক্রূর চোখে
আর লকলকে জিভে তাকায় কবির
বিনীত আস্তানাটির দিকে। দীর্ঘকাল পদ্য লিখে
পারেনি সে গোছাতে সংসার কোনও শিল্পীর ধরনে! করুণার
পাত্র হয়ে ভাসবে কি মেঘলোকে আর
কখনও কখনও কেউ হয়তো লিখবে ব্যঙ্গ ছড়া।

৩০-১১-২০০২