একটি উত্তর-আধুনিক কবিতা

কবিতা লিখতে না-পারার দীর্ঘ খরা দেখে দেখে
চোখ পুড়ে যায়,
চোখ ফেটে রক্ত ঝরে। হে মধুর, কখনো কখনো
তোমার নিবাসে গিয়ে দ্বিপ্রহরে অথবা সন্ধ্যায়
বলি, মনোকষ্টে আছি, যেহেতু কবিতা
পালিয়ে বেড়ায় ঘন বনে।
কবিতা লিখতে না পারার কষ্ট জানি
তোমার চুম্বন থেকে বহুকাল নির্বাসনে থাকা
যেন; তুমি হাত ধরে আমাকে এক্ষুনি
কবিতার যমুনার ঘাটে পৌঁছে দাও; জল পান ক’রে তিয়াস মিটাই।

যখন তোমাকে দিকে প্রগাঢ় তাকাই,
বলো তুমি আচঁল গুছিয়ে,
‘কী দেখছো কবি? দ্যাখো চর্যপদের হরিণী ছোটে
এখন উত্তর-আধুনিক জামানায়
পায়ে দলে আন্ধাধুরা পঙক্তিমালা আর
গৈরিক ডাঙায়
চিবোয় হরিৎ তৃণ। সে তোমার কানে কানে কিছু অনুপম
পংক্তি বলে দেবে, লিখে নাও।

এমন চুম্বনহীন শ্রাবণের দিন, হায়, ক্যায়সে গোঙাইব
এ ভরা বাদরে বিদ্যাপতি এসে দেবেন কি বলে?
বাইরে শীতল জলধারা,
আমার ভেতরে বয় মোহন আগুন। তুমি পাশে
দাঁড়ালে অথবা দূরে সোফায় এলিয়ে দিলে প্রতিমা-প্রতিম
দেহখানি তোমার অজ্ঞাতেয়ামি মদন বাউল হ’য়ে নাচি,
সবুরে মুকুল ভাজি, অকস্মাৎ কবিতা আমাকে
বেড় দিয়ে ধরে, তুমি দ্যাখো, তোমাকেই বুকে বাঁধি।

২১/৭/৯৫