এতদিনে জেনে গেছি

এতদিনে স্রেফ জেনে গেছি,
অনেকের অনেক কিছুই করবার কথা নয়,
তবু করে। কারো কারো ঠিক
যে-পথে যাবার কথা,
সে পথে যায় না তারা ভুলেও কখনো।

সাজ্জাদ গেরস্তমন নিয়ে জন্মেছিল, বলা যায়;
অথচ সে একটি মুখর ঘর আর
নিকানো উঠোন
ছেড়েছুড়ে কোথায় যে গেল, তার
হদিশ মেলেনি আজো। কখনো কখনো
উড়ো কথা শোনা যায়, সে নাকি সুদূর
পীরের মাজারে ঘোরে, সিন্নি খায়, ঘুমায় বেগানা
আস্তানায়।

মাশুক নির্ভুল অঙ্ক কষতে পারেনি কোনোদিন,
এখন সে প্রত্যহ দরকারী
হিশেব মেলাচ্ছে অতিশয় মনোযোগ সহকারে
সরকারি দপ্তরে।
আঝাস নিশ্চুপ ছিল বড়, ওর মুখে
বিষাদের মেঘ
ভাসতো সর্বদা, মনে হতো
আড্ডা থেকে বেরিয়েই আত্মঘাতী হবে
যে-কোনো রহস্যময় রাতে একা ঘরে
অথবা সকালে। অথচ সে
পেতেছে সংসার আর ছোট পরিবার
সুখী পরিবার শ্লোগানের মুখে দিব্যি তুড়ি মেরে
সাত সন্তানের হয়েছে জনক।

আর যাকে নঈমকে, আমরা বেজায়
চুলবুলে বাচাল যুবক ভাবতাম
এবং খানিক স্থূল; কী অবাক কাণ্ড, একদিন
সে-ই খেলো বড় বেশি ডোজে নিদ্রাবড়ি।

হাশমত, প্রায়শই যে দেখতো স্বপ্নে সূর্যমুখী
ফুল,
কাটতো সময় যার দিবাস্বপ্ন দেখে,
দেশের বিপন্ন ডাকে
সে দিলো প্রবল সাড়া, গেল
মুক্তিযুদ্ধে একাত্তরে।
দেশ ভ্রমণের খুব শখ ছিল তার,
এখন সে নিত্যদিন হুইল চেয়ারে বসে সূর্যাস্তের রঙ
দ্যাখে, মাঝে মাঝে ফ্যালে চাপা দীর্ঘশ্বাস
দেশের দশের কথা
এবং নিজের কথা ভেবে।

এবং আমার কথা ছিল
ছবি আঁকবার,
যদিও আমার জনকের বিবেচনা
ছিল বিপরীত কিছু, ভাবতেন তিনি স্বপ্নঘোরে-
আমি হবো জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
জেদী আমি তার স্বপ্নগুলি
গুঁড়িয়ে কাচের দামী বাসনের মতো,
একটু আলাদাভাবে রেখেছি আমার কথা; আমি
ছবি লিখি অক্ষরে অক্ষরে।