ফুঁসে ওঠে ফতোয়া

তোমরা যারা পরের খেয়ে
নিজের ঘরের জৌলুস বাড়াও,
তোমরা যারা কখনো গা’
থেকে ঝরাওনি
শ্রমের স্বেদ, তোমরা যারা
নারীদের অষ্টপ্রহর
দম আটকানো চারদেয়ালের
ঘেরে
বন্দী রাখার বিধান দাও,
যাতে রৌদ্র জ্যোৎস্না চুমো
খেতে না পারে
ওদের শরীরে, তোমরা যারা
কাউকে
ভাতকাপড় দিতে পারো না,
তারাই
অন্যের রুজিতে নিষেধাজ্ঞা
সেঁটে দাও।

তোমরা যখন হেঁটে যাও,
তোমাদের পায়ের নিচে
ডুকরে ওঠে মাটি,
তোমরা যখন কথা বলো
ফিসফিসে কণ্ঠস্বরে
মোড়লদের সঙ্গে, সতেজ
লতাগুল্মের মুখ শুকিয়ে যায়,
বুক কাঁপে শস্যক্ষেতের।
তোমরা যারা একটি সুন্দর
বাক্যও উচ্চারণ
করতে পারো না তুলির
আঁচড়ে
ফোটাতে পারো না প্রকৃতির
রূপ,
তোমরাই ফতোয়া দাও আলো
ঝলোমলো
কবিতার বিরুদ্ধে, চিত্রের
বিরুদ্ধে।

যারা, গলিত অন্ধ সমাজকে
বদলে ফেলার কাজে
মগজ খাটায়, হাত লাগায়,
তারা তোমাদের পথের কাঁটা,
যাদের সত্তায় শস্যরাজির
হাসি ছড়ানো,
তোমাদের ফতোয়া ফুঁসে ওঠে
তাদের বিরুদ্ধে।
পারলে তোমরা একঘরে
করতে
গোলাপ, চামেলী আর
কৃষ্ণচূড়াকে।
পারলে তোমরা পাহাড়-চূড়া,
নদীর ঢেউ
পাখির বাসা, জোনাকি আর
দু’টি হৃদয়ের মিলনের রঙিন
সাঁকোর বিরুদ্ধে
লটকে দিতে হিসহিসে
ফতোয়া।

৬.৪.৯৪