ঘুড়ে দাঁড়ালাম

কিছুকাল ধরে কী ভীষণ মনোভার
নিয়ে আছি। জীবনকে অগাধ কাদায় ডোবা কোনো
শুয়োরের মতো মনে হচ্ছে ইদানীং। ভালো লাগবার
মতন কিছুই আর নজরে পড়ে না। ঘরবাড়ি,
সারি সারি গাছ, ঝিল, উড়ে যাওয়া
পাখির মনে আনে না খুশির ঢল। শুধু
ধু-ধু মরুভূমি চোখে ভাসে,
মরীচিকা সকল কিছুই যেন, জনমনিষ্যির
সঙ্গ বিষবৎ, রবিশঙ্করের সেতারের গৎ
কেমন অসার ঠেকে, এমনকি শাগালের ছবি
দেয় না ছড়িয়ে
স্বপ্নাভা আমার চেতনায়।

ভাবি মাঝে-মাঝে-
যে আমার পেছনে পেছনে হাঁটে, থেমে
যায় হাত রেখে দরজায়,
তার প্ররোচনা মেনে নিয়ে মাথা রাখি
ট্রেনের চাকার নিচে, ঝুলে পড়ি ফ্যানে
অথবা সেবন করি প্রচুর ঘুমের বড়ি প্যাঁচা-ডাকা রাতে।

একদিন কোনো এক হাই-রাইজ দালানে পোঁছে
বারো তলা থেকে
ঝাঁপিয়ে পড়ার মৃদু ইচ্ছাটিকে অনেক গোঁয়ার
করে তুলে সিঁড়ি খুব কায়ক্লেশে ভাঙতে ভাঙতে
দ্বাদশ তলায় উঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার
মুহূর্তে তোমার মুখ মনে পড়ে গেল
অকস্মাৎ, না পড়াই ছিল বাঞ্ছনীয়-
কে যেন আমার ঘাড় ধরে টেনে জমিনে নামিয়ে নিয়ে এলো
আর আমি তক্ষুণি আবার
জীবনের দিকে তীব্র ঘুরে দাঁড়ালাম।