হাতে দোলে নিশান

লোকটার ঘুরে ফিরে দিন যায়, রাত
কাটে
রাস্তায় ঘুমিয়ে।
হাঁটে, হাঁটে, হাঁটে
সে প্রত্যহ নানা পথে, কখনো কখনো
চাখানায় ঢোকে একরাশ ধুলো নিয়ে
গায়ে।
পায়ে
জুতো নেই এবং রা নেই তার মুখে।
কী অসুখে
ভুগে তার
শরীর কঙ্কালসার
কে বলবে বলো?
চোখ ছলো ছলো,
উসকো খুস্‌কো চুল ঘাড় বেয়ে নামে,
রাত্রির গভীর যামে
কুকুরের সঙ্গে কথা বলে,
কিন্তু খাদ্যকণা কুড়িয়ে আনার ছলে
নোংরা নখে তুলে আনে মাটি,
মন্ত্রোচ্চারণের মতো বলে, ‘তুই খাঁটি,
চন্দ্রসূর্য সাক্ষী, কীট পতঙ্গ সবাই খাঁটি আর
গাঢ় পূর্ণিমার
ভেতরে যে মায়া থাকে, তাও
বড় খাঁটি; তারপর সে শরীরটাকে টেনে টেনে
নিয়ে যায় নিঝুম পাড়ায়।
কীযে হাতড়ায়
সারাক্ষণ আশেপাশে। আঁধারকে খুব ছু’য়ে ছেনে
কী একটা জ্বলজ্বলে আঙ্গুলে নাচায়,
যেন বা খাঁচায়
দূরের অচিন পাখি অলৌকিক নাচে মেতে ওঠে।
তার ঠোঁটে ফোটে
সজীব গোলাপ আর অলৌকিক ঘ্রাণে
ভরপুর সে ঘুমায় দুঃখের বাগানে।
হঠাৎ শহরে
প্রহরে প্রহরে
বাজে পদধ্বনি, অগণন। সে শোনে এবং
দ্যাখে চতুর্দিক জবার মতন রঙ
ফেটে পড়ে; দূর্বার মিছিলে
সেও মেশে, রুক্ষ হাতে তার দোলে নতুন নিশান,
কণ্ঠে জাগে গান।
গানের গৌরবে,
কিসের সৌরভে
লোকটা চিমনির চোঙ ছুঁয়ে উড়ে যায় দূর নীলে।
মেঘে মেঘে তার যাওয়া-আসা,
হস্তধৃত সে নিশানে আছে লেখা অলিখিত কথা-
‘সকল মানুষ, পশু পাখি, গুল্মলতা
সবাই জন্যই ভালোবাসা।