যদি কোনোদিন

যদি কোনোদিন আসো দেখবে এখানে লেখা আছে স্পষ্টাক্ষরে
বাড়ির নম্বর। আমি এসেছি এখানে ডিসেম্বরে,
বলা যায়, অকস্মাৎ। পাড়ার ছেলেরা
মাঝে-মাঝে উদ্দীপনা-ঘেরা
মঞ্চে নিয়ে আমাকে বসায়, মাল্যদান
করে আর আনাড়ি কণ্ঠের রাশি রাশি কবিতা ও গান
শুনে ফ্ল্যাটে ফিরে আসি রাতে,
কখনো ছিঁচকে চোর শুনি ধরা পড়ে হাতেনাতে।

কুয়াশার শাল মুড়ি দিয়ে বসে থাকে যে সকাল,
তাকে সুরে সুরে চুমো খায় পাখি; লোক যায়, আসে,
পাতাবাহারের ডাল
ঝুঁকে থাকে জানালায়। পৌর ট্রাক দেয় হানা, দখিনা বাতাসে
ফুল আর ড্রেনের মিশ্রিত গন্ধ। কিশোরেরা শখের ক্রিকেট
খেলে ফাঁকা জায়গাটায়। কখনো বা নেট
টাঙিয়ে দু’দল লোটে ব্যাডমিন্টনের
আনন্দ এবং হল্‌দে তেতলা ফ্ল্যাটের
বন্ধঘরে কে তরুণ রাত তিনটেয় করে নান্দীপাঠ
আত্মহননের, ভয়ে কাঠ
কেউ কেউ গভীর রাত্তিরে, জাগে মিলিত বিলাপ।
কৃষ্ণ কৃষ্ণ, রাধে রাধে
বলে চলে যায় দূরে বিবাগী বৈষ্ণব
গান গেয়ে। ভোরে দেখি অদূরে প্রশান্ত খোলা ছাদে
অষ্টাদশ শতকের রাজার শিরের মতো টব,
রোদের আবীরে স্নিগ্ধ ফুটে আছে আর্কিড, গোলাপ।