খুশি, হঠাৎ খুশি

খুশি, হঠাৎ খুশি
তুই কি আমার পুষি?

চড়ে সোনার রথে
স্বপ্নপুরীর পথে
আসিস কি তুই ওরে
হঠাৎ আমার দোরে?

খুশি, হঠাৎ খুশি
তুই কি আমার পুষি?

দিনটা যখন ডাকে,
কাজলা মেঘের ফাঁকে
তুই কি রোদের উঁকি?
তুই কি সূর্যমুখী?

দুউপুর যখন চড়া,
কানায় কানায় ভরা
কালো দিঘির জলে
পদ্মপাতার তলে,
তুই কি মাছের নড়া?

এই শহরে তোকে
পাচ্ছে পাড়ার লোকে।
সবখানে তোর সাড়া;
উঠছে মেতে পাড়া।
ভাঙা ইটের ফাঁকে
তুই কি সবুজ চারা?
সে সুর ঝরে ঝুনঝুনিয়ে
ঝাঁঝাঁ দুপুর বেলায়,
মৌমাছিদের মেলায়।

সে সুর এল মাঠে পেরিয়ে
হাট পেরিয়ে
ঘাট পেরিয়ে
বালিহাঁসের পাট এড়িয়ে
হঠাৎ এল পথ ভুলে কি
প্রিয় আমার শহরে?
আনাগোনার প্রহরে?

সে সুর ওড়ে ফুরফুরিয়ে
সে সুর ঝরে ঝুরঝুরিয়ে
মস্ত বড় বাড়িতে
রিকশা, মোটরগাড়িতে।

সে সুর ঝরে পথের ধারে
ব্যস্ত মুদির চালায়,
নোংরা গলির নালায়।

ট্টাফিক আলোর হুকুম চেখে,
পথে-ঘাটে পুলিশ দেখে
থমকে দাঁড়ায় একলা,
মুখ হলো তার মেঘলা।

একটু পরে সামলে নিয়ে
বেচারামের দেউড়ি গিয়ে
সে সুর ওড়ে ফুরফুরিয়ে,
সে সুর ঝরঝুরিয়ে
দিন মজুরের খুপরিতে,
উপুড়-করা চুপড়িতে।
সেই যে সকাল হতে
শান-বাঁধানো পথে
মানুষগুলো চলে
পুতুলনাচের ছলে।

অজানা এক ঝোঁকে
ইটের গুহায় ঢোকে।

সেখানে সব ঢুকে
মাথায় মাথা ঠুকে
কাশে এবং হাঁচে,
এমনি করেই বাঁচে।

হঠাৎ আকাশ ফুঁড়ে
পক্ষী আসে উড়ে।
সোনার জলে ভিজে
পক্ষী বলে কী-যে।
পাখির মধুর সুরে
কাছে এবং দূরে

সত্যি সবার আগে
চম্পা পারুল জাগে।

খুশি, হঠাৎ খুশি,
তুই কি আমার পুষি?
রাখব তোকে বুকে,
চোখের তারায়, মুখে।
আমার কাছে এলে
রৌদ্রে দেব মেলে।
রাত্রে তোকে পেলে
জ্যোৎস্না দেব ঢেলে।
দুপুর হলে খাঁ খাঁ,
করব তোকে পাখা।
শীতে হলে কাবু
বানিয়ে দেব তাঁবু।

দত্যিদানোর হাঁকে,
হুতুম পেঁচার ডাকে
ডাইনি বুড়ির শাপে
বুক যদি তোর কাঁপে,
ধরব তোকে বুকে,
থাকবি শান্ত সুখে।

বল তো তোকে খুশি
কেমন করে পুষি?