কিছুই পারি না

কিছুই পারি না আমি। প্রত্যহ পাথর কেটে কেটে
কান্তিমান মূর্তি কিংবা দুধশাদা নহর বানানো
হয় না আমাকে দিয়ে। মধ্যযুগী নাইটের মতো
ড্রাগনের আতশী নিশ্বাস থেকে কোনো তরুণীকে
করিনি উদ্ধার; সবদেজ ঘোড়া ছুটিয়ে কান্তারে,
মরুপথে, সুনসান মায়াবী উদ্যানে কোনোকালে
যাইনি, ছিঁড়িনি সর্বরোগহর ফল, মুক্তিজন
ছিটিয়ে পারিনি দিতে প্রাণ অগণিত প্রস্তরিত
প্রজাদের অভিশপ্ত রাজ্যের অথবা ভাসাইনি
ভেলা দূর সমুদ্রের ঢেউয়ে ঢেউয়ে, বাঁধিনি তো ডেরা
বিপুল রহস্যঘেরা জনশূন্য দ্বীপে, প্রাণপণ
লড়িনি, জংলির সঙ্গে, অজচর্মে ঢাকিনি শরীর।

একা-একা আজীবন বয়ে চলি ব্যর্থতার ক্রশ!
পিঠের উপর নিয়ে রৌদ্রজল লাঙল চালিয়ে
পারি না মাটির বুক চিরে চিরে ফসল ফলাতে;
সরু ডিঙি বেয়ে নিশিদিন পারি না ফেলতে জাল
গহন নদীতে, চিরকাল খনিও অগম্য আর
পশুপাখি নিরাপদে করে চলাফেরা সর্বক্ষণ
আমার চৌদিকে- আমি শুধু কিছু অক্ষর সাজিয়ে
কবিতা রচনা ছাড়া এ যাবত পারিনি কিছুই।
আজো কবিতার মতো সত্য কবিতা ফুটলো কি না
খাতার পাতায় বাস্তবিক, হায়, তা-ও তো জানি না।