মাছ

মাছ তুমি প্রতিপলে করতলে হচ্ছো ম্লান। যতদূর জানি,
জল ছেড়ে শালুকের স্পর্শ ছেড়ে হাতের চেটোয়,
রোদের সোনালি কাঁটাতারে
শুয়ে থেকে মাথাটা তোমার
দিলো চাকদানা।
মেঘের গোযোর নেই একটু আকাশে, মাছ তুমি
হচ্ছো ম্লান; নৌকো যাচ্ছে রোদের ভেতর দিয়ে ফুলো
পাল তুলে। চোখ দেখি অপলক, হয়তো সেখানে
এখন জলজ স্মৃতি স্থিরচিত্র। মাছ তুমি সাঁতার জানোনা
হাতের ডাঙায়, তবু সকালবেলার তারা হয়ে
আছো স্বপ্নে, দুঃস্বপ্নে অংশত। জীবনের প্রতিষ্ঠিত
সোনালি কামানি থেকে যাচ্ছো সরে। এখন তোমাকে
অথৈ শূন্যতায়, নীলিমায়
কিছুতেই ওড়ানো যাবে না
ওগো মাছ, হাতের ডাঙায়-পড়া মাছ।

কোথাকার খোয়াইল্যা পাখি
মগজে নোয়ানো
জল-ছোঁয়া তীক্ষ্ম কঞ্চেটায় বসে বুঝি মাছরাঙা হয়ে এলো
তোমার জীবনহর। দেখছো মরীয়া হয়ে, খোলা
চোখে চমকালো চান্‌নি উয্‌যালা এবং শরীরের
নক্সী ত্বক ক্রমাগত হারাচ্ছে তীক্ষ্ণতা।
মাছ তুমি ডগা ডগা রোদের ভেতরে আছো, আমি
তোমার ভেতরে যাই, অকাতরে হই
রঙিন ঘুড়ির মতো ত্বক, হই কারুকাজময় শ্বেত কাঁটা
ওগো মাছ, হে বন্ধু আমার।

প্রথম যখন হাতে তুলে নিয়েছিলাম তোমাকে
আলগোছে-প্রতিদিন কত কিছু তুলি বইপত্র, ছেঁড়া মোজা,
জুতোর কালির ডিবে, আলপিন, শার্টের বোতাম, এরকম
অনেক কিছুই তুলি কাজে বা অকাজে-
মনে হয়েছিল যেন তুমিও তেমনি কোনো জিনিশ বস্তুত।
জাপানি সিল্কের মতো চামড়ার আদরে চমকিত
দেখলাম, তস্‌বী-দানা চোখ নিয়ে চেয়ে আছো রোদের ভিতরে
আমারই চোখের দিকে, আছো হাতের জায়নামাজে, স্থির,
অনবোলা। অকস্মাৎ আমাকে বিঁধলে তুমি মাছ, ওগো মাছ,
হে বন্ধু আমার, অলৌকিক বড়শিতে।
নির্জন কিনারে হাঁটু গেড়ে কাটাল পাখির বুলি শুনি, ভাবি-
তোমাকে ছাড়বো আমি নাকি তুমি আমাকে দয়ালু?