মাৎস্যন্যায়

সে জলে স্বচ্ছছন্দ, কেলিপরায়ণ খোলা চোখে দ্যাখে
শামুক, নিথর নুড়ি, অন্য মাছ-জলের ভুবন।
সাঁতারে আরাম, লেজ নেড়ে হয়তো কাউকে ডাকে,
অগোচরে হতে চায় ক্ষণিক-প্রেমিক। টলটলে
জলজ দুপুরে কিংবা টইটম্বুর রাত্তিরে নদী
যখন সঙ্গীতময় হয়, সে আপন অন্তরালে
ভাসমান খুশি যেন। তবু ভয়, কাঁটাতার-ভয়
তার এই মাঝারি সত্তায় লেগে থাকে সারাক্ষণ
কেমন রহস্যময় বিষাক্ত গুল্মোর মতো। বড়ো
মাছ তাকে দেখলেই ধেয়ে আসে, লোভাতুর; আর
সে পালায় ঊর্ধ্বশ্বাসে, যেন বা দেহের কাঁটাজাল
আসবে বেরিয়ে ত্বক ফুঁড়ে, খোঁজে স্বগোত্রের ব্যুহ
এখানে-সেখানে শক্র-তাড়িত, সন্ত্রস্ত, দিক ভুলে
হায়, এসে যায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষুধার্ত মাছের সংঘে।
আক্রমণে মত্ত ওরা। সে অত্যন্ত একা, মীনরাজ্যে
অভিমন্যু, আর্ত, ক্লান্ত সাঁতার-রহিত, নিরুপায়।