মায়াবিনী মূলে

রোজকার মতো আজও ভোরবেলা তোমাকে ছাড়াই
জেগে উঠি এই বাসী শয্যায়। তুমি নেই তবু
মিছে হাতড়াই, বাঁদিকে আমার শূন্যতা থেকে
ছায়ার মতোই কী যেন জন্ম নিল মনে হয়-
জায়মান সেই বস্তুর প্রতি তাকাতেই দেখি
ছায়ার চেয়েও অধিক ছায়াটি চকিতে মিলায়।

টুথব্রাশ মুখে জানালার ধারে একলা দাঁড়াই,
নিজেকে কেমন ন্যালাক্ষ্যাপা আর ভারি জবুথবু
লাগে, যেন আমি একতাল ঘুম। হাওয়া যায় ডেকে
ফিসফিসে স্বরে বারান্দাটায়, একি বিস্ময়,
কারো চেনা নাম। যা ছিল আমার চারপাশে মেকি
এবং ঠুনকো সাদা গোলাপের গাথা হয়ে যায়।

আমার ভুরুতে স্বপ্নের ছায়া। দরজায় এসে
দাঁড়ালে কি তুমি? সামনের দিকে এগোতেই চোখে
থান কাপড়ের মতো শুভ্রতা হয় মরীচিকা।
এখানে তোমার না-থাকার বুনো আন্ধার দিয়ে
করি আচমন। এই তো হঠাৎ ভেসে আসে সুর
বাথরুম থেকে, তুমি কি গাইছ শাওয়ারটা খুলে?

তোমার শরীর নিমেষে রচিত সে সুরের রেশে।
আমি তাকে বাঁধি বাহুতে নিবিড় অতীতের ঝোঁকে,
কিন্তু আমার আশ্লেষে এ কি শরীরের শিখা
ছায়া হয়ে গলে, জল হয়ে ঝরে। দৃষ্টি সরিয়ে
দেখি ডুমুরের পাতা উড়ে যায়, ঝরে অতিদূর
ডোবায় এবং তুমিহীনতার মায়াবিনী মূলে।