মোমবাতি

কখনো কখনো এরকম হয়, দেরাজ, কুলুঙ্গি
খুঁজে পেতে
একটি ডাগর মোমবাতি
বের করি, দেশলাইয়ের কাঠি জ্বেলে
পোড়াই সলতে তার, রাখি
লেখার টেবিলে কিংবা মোমবাতিটিকে
যেনবা সোহাগ ভরে হাতে নিয়ে করি
এঘর ও-ঘর, মাঝে মাঝে
বিচ্ছুরিত আলো দেখি একাগ্র দৃষ্টিতে,
যেমন রবীন্দ্রনাথ দেখতেন দিনের প্রথম আলোধারা।

মোমবাতি তপ্ত পানি ফেলে ফোঁটা ফোঁটা,
হাতে পড়লে হাত দ্রুত
সরিয়ে জমাট মোম ঘষে তুলে
ফেলে হাত বুলোই খানিক ছ্যাঁকা-খাওয়ার জায়গাটায়। কখনোবা
টপ-টপ-করে-পড়া জ্বলের আড়ালে
কস্মিনকালেও
না-দেখা তাতার সুন্দরীর অশ্রুপাত লক্ষ্য করে
বড়ই উদাস হই। ঝড়
বইতে থাকে বুকের ভেতর, সেই রোরুদ্যমানা, এলোকেশী
সুন্দরীর কথা ভেবে বড় কষ্ট পাই।

লোডশেডিং-এর ফলে মোমবাতি মহার্ঘ এখন,
তবু কিনি নিয়মিত; অন্ধকারে মোমবাতি জ্বেলে চুপচাপ
বসে থাকা ঘরে,
শিখাটির দিকে অপলক চেয়ে-থাকা
কিছুক্ষণ, অথবা সিঁড়িতে, বারান্দায়, কম্পমান
আলোর সংসর্গে ঘোড়া গথিক উপন্যাসের কোনো
চরিত্রের মতো, ভালো লাগে। ভালো কোনো
মোমবাতি-প্রসূত আলোয়
গহন প্রহরে কবিতাকে ডেকে আনা, কবিতায়
তাকেই আবৃত্তি করা, যাকে ঈষৎ ভুলেছি সময়ের ধোপে।