নাবিক

শাদা পোশাকের লোক, মাথায় সফেদ টুটি, ছিল
বন্দরে বন্দরে, আমাদের
পরিচিত, তাসের আড্ডার একজন। মাঝে-মাঝে
কী-যে হতো তার, তাস ফেলে
জমাট টেবিল ছেড়ে ছুড়ে যেতো চলে,
যেন সে শুনেছে গান জলকন্যাদের। নাম তার কখনো হয় নি জানা।
কোথায় যে গেল
এ নিয়ে আমরা কেউ ঘামাই নি মাথা কোনোদিন।

চাঁদের বন্দি সে, শোনা গেল, জ্যোৎস্নার মায়ায় মজে
হঠাৎ হারিয়ে গেছে ঘোর সামুদ্রিক কুয়াশায়।
অনেক বছর কেটে যায়, বার্ধক্য ছুঁয়েছে আমাদের
তাসের আড্ডার সঙ্গীদের, আমাকেও;
কেউ আত্মভোলা, কেউ স্মৃতি সচেতন, কেউবা স্তিমিত খুব।
একদিন যথারীতি তাসের টেবিলে বসে দেখি
এসেছে সে ফিরে, শাদা পোশাকের যুবা, কী আশ্চর্য, চোখ তার
মুক্তো এক জোড়া, ওষ্ঠে অপার্থিব নীরবতা আর
সমস্ত শরীর থেকে ঝরে
অবিরল সমুদ্রের ফোঁটা ফোঁটা সবুজাভ জল।